ঝিনাইদহ জেলা সদরে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের নির্মান কাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি। কাজটি ১৮ মাসে শেষ করার চুক্তি ছিল টিই এন্ড ইউসিসি জেবি নামের ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে। এ দিকে যথা সময়ে ৮ম তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় পুরাতন ভবনের বরান্দায় রোগীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রতিনিয়ত। চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ।
এ বিষয়ে ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম টিপু জানান,ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে ঘন ঘন নির্বাহী প্রকৌশলী বদলী হওয়ার কারণে তারা ঠিকমতো সহায়তা পাননি। তারপরও ছিল ফান্ড স্বল্পতা। আগামী এক মাসের মধ্যেই ভবনটি হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদ জানান, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুন এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৭ কোটি সাড়ে ২৩ লাখ টাকা। ১৮ মাসে কাজ শেষ করে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ভবন হস্তান্তরের কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৩ বছরেও ভবন হস্তান্তর করতে পারেনি। তিনি জানান, সর্বশেষ বৈদ্যুতিক সংযোগ, পাম্প ও লিফটের কাজ শেষ হওয়ার পথে। আগামী ১৭ এপ্রিল শিশু দিবস উপলক্ষ্যে হাসপাতাল ভবন হস্তান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডাঃ হারুন জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে প্রতিদিন এক হাজারের বেশি রোগী বর্হি:বিভাগে দেখা হয়। শনিবার পর্যন্ত এক’শ বেডের বিপরীতে ২৭৬ জন রোগী ভর্তি ছিল। ভবন হস্তান্তর না হওয়ায় প্রশাসনিক অনুমোদন, জনবল নিয়োগ, ২৫০ বেডের খাবার সুবিধা ও ওষুধের বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালের তত্বাবধায়ক বলেন ইতোমধ্যে হাসপাতালের ৯ তলা ভবনে করোনা ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে ঝিনাইদহ গনপূর্ত বিভাগ তাকে জানিয়েছে।
এ দিকে হাসপাতালের নির্মাণ কাজের মন্থর গতি নিয়ে বিল প্রদানে ঠিকাদার ও তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখের মধ্যে বিরোধের কারণ ছিল অন্যতম। নির্মাণ কাজের টেন্ডার ছিল ৩৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা। কিন্তু নকশা ও ডিজাইন মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে ভেরিয়েশন, রিভাইসড এবং ওপি সমন্বয়সহ মোট নির্মাণ মূল্য দাড়ায় ৪২ কোটি ৫৬ লাখ টাকায়। কিন্তু ডিপার্টমেন্ট অনুমোদন দেয় ৪০ কোটি টাকা।
ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ৪০ কোটি টাকার মধ্যে ৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পেয়েছেন। এখনো অনুমোদিত বিলের ৩৩ লাখ টাকা পাবেন। প্রকল্পের অতিরিক্ত ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা তিনি খরচ করলেও এখনো ডিপার্টমেন্ট তা অনুমোদন করাতে পারেনি। অতিরিক্ত বিলের প্রায় আড়াই কোটি টাকা না পেলেও নিজ জেলার প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনি নতুন ভবন হস্তান্তর করে দেবেন বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান। ঠিকাদারের ভাষ্যমতে এই প্রকল্প শুরুর পর থেকে ৫ জন নির্বাহী প্রকৌশলীর বদলী হয়।
নতুন নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী এসে কাজ বুঝে নিতে নিতেই বদলী হয়ে যান। এতে কাজে ব্যঘাত সৃষ্টি হয়। ঝিনাইদহের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মোত্তালেব জানান, পাম্পের কাজ শেষ হলেও আমরা ঠিকাদারের কাছ থেকে ভবন বুঝে নেব। সেটা বড়জোর একমাস সময় লাগতে পারে।