ইবতেদায়ি প্রধান শিক্ষক ও মাদরাসার সহকারী মৌলভীদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ হলো গত ১৭ জুন ইবতেদায়ি প্রধানদের প্রাইমারি প্রধানদের সমান ১১তম গ্রেডে এবং বিএডয়ের সমান ১০তম গ্রেডে বেতন দেয়ার জন্য মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর স্পষ্টীকরণ চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে।
দৈনিক শিক্ষায় প্রকাশিত বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দদায়ক। কিন্তু কষ্ট ও পরিতাপের বিষয়- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর অনুচ্ছেদ ১১.৩.খ এর নির্দেশনা মোতাবেক “২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কামিল ডিগ্রি অর্জনকারী মাদরাসার এমপিওভুক্ত সহকারী মৌলভীরা কামিল ডিগ্রির জন্য বিএডয়ের সমান গ্রেড ১০ এ বেতন ভাতা প্রাপ্য হবেন” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে কামিল পাস করা শিক্ষকদের বিএড স্কেল থেকে ও বিএড করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে পুরাতন সিলেবাসে ডিগ্রির ন্যায় দুই বছর মেয়াদী কোর্সে (তখনও ফাযিলকে বিএ’র মান দিয়ে নতুন সিলবাস করা হয় নাই) যারা ফাযিল পরীক্ষায় পাস করেন তাদেরকে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাত্র ৩০০ মার্কের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিএ পাসের মান দেয়া হয় এবং সেই সনদ নিয়ে মাস্টার্সের সমমান কামিলে ভর্তির সুযোগ দেয়াসহ বিএড করা এবং অন্যান্য যাবতীয় সুযোগ দেয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ফাযিলকে ৩ বছর মেয়াদী কোর্সে উত্তীর্ণ করে স্বয়ংসম্পূর্ণ সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়।
মূল কথা, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে যারা ফাযিল পরীক্ষা দেন তারা ডিগ্রির মান পান এবং তারা যখন কামিল পরীক্ষা দেন তখন থেকে মাস্টার্সের মান দেয়া হয়।
অন্যদিকে, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে যারা ফাযিল পাস করে যথারীতি ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে কামিল পাস করেন তারা দুটি সুযোগ থেকেই বঞ্চিত হন। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের কামিল পাস এবং ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের একই পদ্ধতি, একই সিলেবাস এবং একই মানের। সুতরাং ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পুরাতন সিলেবাসে কামিল পাসকৃত শিক্ষকদের বিএডয়ের সমান মর্যাদা পাওয়া ন্যায্য অধিকার এবং অধিকতর গ্রহণযোগ্য।
এ অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে শিক্ষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং বোধ করি নীতিনির্ধারকরাও যথাযথ বিবেচনা না করায় স্বীয় সত্তার নিকট প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যাবেন।
নীতিনির্ধারকরা এবং সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট সবিনয় নিবেদন, আমার এই প্রস্তাবটি তুচ্ছ জ্ঞান না করে একটু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কামিলকে বিএড মান দিলে শিক্ষকরাও ন্যায্য অধিকার পেয়ে প্রাণ খুলে দোয়া করবেন আর আপনারাও মানসিক প্রশান্তি পাবেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর অনুচ্ছেদ ১১.৩.খ এর নির্দেশনা মোতাবেক “২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কামিল ডিগ্রি অর্জনকারী মাদরাসার এমপিওভুক্ত সহকারী মৌলভীরা কামিল ডিগ্রির জন্য বিএডয়ের সমান গ্রেড ১০ এ বেতন ভাতা প্রাপ্য হবেন” বলে উল্লেখ করে পুরাতন সিলেবাসে কামিল পাসদের বিএডয়ের মান দিয়ে সম্মাননা দিলেও শুধুমাত্র ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে কামিল পাসকৃত সম্মানিত শিক্ষকদের সকলেই বোঝার পরেও কি বঞ্চিত করা উচিৎ হবে?
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সকল ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে কামিল পাসকৃত ভাইবোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজের ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।
লেখক : এম এ ওয়াহাব জোয়াদ্দার, ইবতেদায়ি প্রধান, বাঙ্গালা মরিয়ম হোসেনে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা, চাটমোহর, পাবনা।