৩২ বছর প্রিমিয়াম দিয়ে পাওয়া যাবে আজীবন পেনশন সুবিধা - দৈনিকশিক্ষা

৩২ বছর প্রিমিয়াম দিয়ে পাওয়া যাবে আজীবন পেনশন সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

৩২ বছর প্রিমিয়াম দিয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে। আর একজন ব্যক্তি পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন ৬০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে। পেনশনের আওতায় আসার জন্য কমপক্ষে ১০ বছর নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে হবে। এসব বিধান রেখে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে সচিবালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীরা অবসরে যাওয়ার পর আমৃত্যু পেনশন সুবিধা পান প্রতি মাসে। সেই চাকরিজীবী মারা গেলে তার স্ত্রী এবং বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী সন্তান থাকলে তাকেও আমৃত্যু পেনশন দেওয়া হয়। তবে বেসরকারি খাতে কোথাও কোথাও ভবিষ্য তহবিল বা প্রভিডেন্ড ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটি সুবিধা থাকলেও পেনশনের সুবিধা নেই। ফলে চাকরি শেষে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হন বিপুলসংখ্যক মানুষ। দেশের সব মানুষকে পেনশনের আওতায় আনতে আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকাকালে ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বক্তৃতায় একটি রূপরেখা দিয়েছিলেন। তার ওপর ভিত্তি করেই এই পেনশন আইনের খসড়া করা হয়েছে। 

আইনের খসড়া থেকে জানা গেছে, সাধারণ নিয়মে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সর্বজনীন পেনশনের সুযোগ পাবেন। কিন্তু বিশেষ ব্যবস্থায় এর বেশি বয়সীরাও এই পেনশনের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ সুবিধা ভোগ করবেন। জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে বাংলাদেশি নাগরিক পেনশনে অংশ নিতে পারবেন। বিদেশে কমর্রত বাংলাদেশিরাও নিজেদের নাম রেজিস্ট্রেশন করে এবং প্রিমিয়াম দিলে এই পেনশনে অংশ নিতে পারবেন। সুবিধাভোগী বছরে ন্যূনতম বার্ষিক জমা নিশ্চিত করবেন। অন্যথায় তার হিসাব সাময়িকভাবে স্থগিত হবে এবং পরে বিলম্ব ফিসহ বকেয়া চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে হিসাব সচল করা হবে। সুবিধাভোগী আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে চাঁদা হিসেবে বর্ধিত অর্থ জমা করতে পারবেন। নিবন্ধিত চাঁদা জমাকারী পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে জমাকারীর নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের (মূল জমাকারীর বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) জন্য মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন।

একজন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চারজন সদস্য নিয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে এবং অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যে ব্যক্তি ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত প্রিমিয়াম দেবেন, তার পেমেন্টে এক রকম হবে, যে ৪০ বছর পর্যন্ত দেবেন তারটা আরেক রকম হবে। প্রিমিয়ামের একাধিক স্তর থাকতে পারে। যিনি বেশি স্কেলের প্রিমিয়াম দেবেন, তার পেনশন বেশি হবে। পেনশনারদের কেউ ৬০ বছরে মারা গেলে তার নমিনি পেনশনের সুবিধা প্রাপ্য হবেন। আইনের মধ্যে প্রিমিয়াম উল্লেখ করা হবে না। 

বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে। যাতে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা যায়। কারণ আজ ২ হাজার টাকা ঠিক করা হলো, ২০ বছর পর ২ হাজার টাকার মূল্য থাকবে না। যাদের প্রিমিয়াম দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের সুবিধার বিষয়টি রুলের মধ্যে থাকবে। পেনশনের কোনো টাকা মার যাবে না, কেউ দিতে না পারে বা মারা গেলে তিনি যদি প্রিমিয়াম আইনের মাধ্যমে কিছু না পান, তাহলে বিষয়টি রুলের মাধ্যমে নিয়ে আসা হবে।’

খসড়া আইনটি লেজিসলেটিভ বিভাগ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। একই বিভাগের চূড়ান্ত অনুমোদন শেষে খসড়াটি সংসদে চলে যাবে।

প্রেস কাউন্সিল আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন : অপসাংবাদিকতার জন্য সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করতে পারবে প্রেস কাউন্সিল। এমন বিধান রেখে ‘প্রেস কাউন্সিল (সংশোধন) আইন, ২০২২’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, খসড়া আইনে অপসাংবাদিকতার জন্য সংবাদ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে অর্থদ-ের কথা রাখা হয়েছে। আগে প্রেস কাউন্সিল শুধু তিরস্কার করতে পারত। এটা প্রিন্ট ও ডিজিটাল সব সংবাদমাধ্যমের জন্য বলবৎ হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় খসড়ায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা ইত্যাদি ক্ষুণœ বা ভঙ্গের অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদ-ের প্রস্তাব দিলেও মন্ত্রিসভা তাতে সায় দেয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের পর আইনটিকে আবারও মন্ত্রিসভায় তোলা হবে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৪ সালে একটা প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট ছিল সেটার সংশোধনী নিয়ে আসা হয়েছে। আগে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা ১৪ ছিল, সেটা ১৭ করা হয়েছে। তথ্য অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় এবং সামাজিক সংগঠনের একজন নারী সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করে পরিধি বাড়ানো হয়েছে। কাউন্সিলের সেক্রেটারিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার মানোন্নয়ন-সংরক্ষণ এবং অপসাংবাদিকতা দূর করতে কাউন্সিলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা ইত্যাদি ক্ষুণœ বা ভঙ্গের দায়ে অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। ওনারা একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন কিন্তু কেবিনেট এটাতে রাজি হয়নি। এখন তিরস্কারের দ- আছে।

কাউন্সিলের দেওয়া আদেশ সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশের বিধান নতুন যুক্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে হানিকর বা প্রেস কাউন্সিলের আচরণ বিধিমালা পরিপন্থী সংবাদ, প্রতিবেদন, কার্টুন ইত্যাদি প্রকাশের দায়ে কোনো সংবাদপত্র বা সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে প্রেস কাউন্সিল। সংবাদ সংস্থা বলতে প্রিন্ট মিডিয়া এবং সব ডিজিটাল মিডিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যে অর্থদ-ের কথা আইনে উল্লেখ করা আছে, সেটি সংশ্লিষ্ট সংস্থা বহন করবে বলেও জানান তিনি।

খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, কার্টুন যদি প্রিন্ট বা ডিজিটাল মিডিয়ায় দেন, সেটা যদি অবমাননার কিছু হয়, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু হয়, তাহলে তো এটা আপনার অপরাধ হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অর্থদ- ডিসকাশনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটা ফাইনাল অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এটা আলাপ-আলোচনার বিষয় আছে, তাই প্রাইমারি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটা ভেটিং হয়ে আবার আসবে। ফাইনালি এটা আবার কেবিনেটে আসবে। যদিও ছোট একটি সংশোধন তারপরও এটাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এটা আবার আসবে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038959980010986