৫ মাস বয়স বাড়িয়ে একটি সরকারিকৃত স্কুলে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে স্কুলটির সভাপতির পূত্রবধুকে। নীলফামারীর জলঢাকার কৈমারী ইউনিয়নের সরকারিকৃত চেংমারী ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হওয়ার আগে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে চাকরিবিধি থেকে প্রায় ৫ মাস কম বয়সী শিল্পী আক্তারকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিল্পী আক্তার প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীণ সভাপতি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু ছালেকের পুত্রবধু। সম্প্রতি সরকারিকৃত স্কুলের শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের কাগজপত্র যাচাইয়ে বিষয়টি নজরে এসেছে।
জানা যায়, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই দ্বিতীয় ধাপে স্কুল সরকারিকরণ হয়। বিদ্যালয়টিতে সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদের জন্য ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার নিয়ম থাকলেও নিয়োগ এবং যোগদানে এর কোনটাই মানেনি তৎকালিণ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু ছালেক। সরকারি ঘোষণা হওয়ার আগে নিজের মেয়ে এবং ছেলের বউকে নিয়োগ দিতে নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা করেননি তিনি। চাকরিবিধি অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সে কাউকে নিয়োগ দেয়ার নিয়ম না থাকলেও নিজের ছেলের বউ শিল্পী আক্তারের বয়স ৪ মাস ২১ দিন কম থাকলেও তাকে নিয়োগ দেন সভাপতি আবু ছালেক।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিল্পী আক্তার ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের রাজারহাট কাবাদিয়া আলিম মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেন। সনদ অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল। তাকে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ নভেম্বর। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর ৭ মাস ৯ দিন। ১৮ বছর পূর্ণ থেকে বাকি ছিল ৪ মাস ২১ দিন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে সভাপতির ছেলের বউয়ের চাকরি বাঁচানোর জন্য অতিগোপনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভা না করে এবং পুনরায় কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কাগজে কলমে শিল্পী আক্তারকে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ৩১ মে নিয়োগ দেন।
যদিও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকার নামের তালিকায় দেখা যায়,সহকারী শিক্ষিকা শিল্পী আক্তারের যোগদানের তারিখ ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ নভেম্বর। শিল্পী আক্তারের দ্বিতীয় নিয়োগটি ছিল সম্পুর্ন ভূয়া। এতদিনে শিল্পী আক্তারের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি গোপনে থাকলেও বর্তমান সরকারের শিক্ষক স্থায়ীকরণের জন্য শিক্ষকদের কাগজপত্র পূনরায় যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তথ্য চাওয়া হলে বিষয়টি প্রকাশ পায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা শিল্পী আক্তার মুঠোফেনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান,‘আমাকে দুইবার নিয়োগ দেয়া হয়েছে, প্রমথবারে বয়স কম থাকায় সভাপতি আমাকে দ্বিতীয়বার নিয়োগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তৎকালিন ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ দাতা আবু ছালেকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নূর মোহাম্মাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন,শিক্ষকদের বয়স যাচাইয়ে আমাদের কোন করনীয় নেই,তবে এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষ দেখবেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবীজ উদ্দিন সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষক স্থায়ীকরনের জন্য সকলের মত শিল্পী আক্তারে কাগজপত্র যাচাইয়ে তার বয়স কম থাকায় এবং চাকরিবিধি না মেনে শিক্ষক নিয়োগ নেয়ায় আমি শোকজ করেছিলাম। পরবর্তীতে তিনি পরের নিয়োগটি দেখিয়ে আমাকে জবাব দিয়েছেন। দুইবার নিয়োগ দিয়ে তারা অনিয়ম করেছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।