করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশব্যাপি এক বছরের বেশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি বাবদ অর্ধলক্ষাধিক টাকা আদায় করছে চট্টগ্রামের সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। টিউশন ফি ও ফরম পূরণ বাবদ নেয়া হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। আর এ টাকা পরিশোধ না করলে শিক্ষার্থীদের এসএসসির ফরম পূরণ করতে দেয়া হচ্ছে না। এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন স্কুলটির পরীক্ষার্থীরা।
মেহেরুন নেছা আইরিন নামের স্কুলটির এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক সম্প্রতি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে এসব অভিযোগ জানিয়েছেন।
অভিযোগে ছাত্রীর বাবা মো. আইয়ূব রাজা দাবি করেন, চট্টগ্রামের সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থী মেহেরুন নেছা আইরিন ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতন অধ্যয়ন করে আসছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ১০ম শ্রেণিতে উর্ত্তীণ হওয়ার পর মহামারি করোনার প্রার্দুভাব ছড়িয়ে পড়ায় দেশব্যাপি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এই বন্ধ সময়েও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘টিউশন ফি’ আদায় করছে। আমার জ্যেষ্ঠ কন্যা মেহেরুন নেছা আইরিন সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজর শিক্ষার্থী। সে আসন্ন ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বর্তমান এসএসপি পরীক্ষার ফরম ফিলাপ চলমান রয়েছে। এই দুঃসময়ে আমার মেয়ের গত ২০২০ শিক্ষাবর্ষের টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ ৫৭ হাজার ৮ শত টাকা এবং ফরম ফিলাপ বাবদ ২ হাজার টাকা ধার্য্য করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ! যা আমার কিংবা কোন অস্বচ্ছল পরিবারের পক্ষে পরিশোধ করা দুঃসাধ্য!
তিনি আরও বলেন, আমি এই বিষয়ে মানবিক আবেদন নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজে গিয়েও ব্যর্থ হই। আমাকে শিক্ষার্থীর করোনায় বন্ধের সময়ের টিউশন ফি ও অন্যান্য ফি বাবদ মোট ৫৯ হাজার ৮০০ পরিশোধ বাধ্যতামূলক করায় আমি মানবিক কারণে টিউশন ফি মওকুফের আবেদন করি। কিন্তু তাতেও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নারগিস আক্তার সাড়া দেয়নি। তিনি ফোনে আমাকে বলেন, হিসেব শাখায় যোগাযোগ করতে। সেখানে গেলে কর্মরত ব্যক্তিরা জানান, বকেয়া মওকুফের সুযোগ নেই। প্রয়োজনে অর্ধেক নগদ এবং অর্ধেকের চেক জমা দিয়ে ফরম ফিলাপ করাতে হবে।
তিনি জানান, আমি নিরুপায় হয়ে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত আবেদন করেছি। এছাড়া শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, শিক্ষা সচিব, জেলা প্রশাসককে অনুলিপি দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথপয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজর চেয়ারম্যান নারগিস আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, মেহেরুন নেছা আইরিন (শিক্ষার্থী) আমার প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে অধ্যয়নরত। মেধাবী হিসেবে সে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতন পড়ার সুযোগ পেয়েছে। করোনার বন্ধেও অনলাইনে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত ছিল এবং আছে। আর টিউশন ফি ছাড়া একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা কঠিন। আমরা অভিভাবকদের সাথে আলোচনাক্রমে টিউশন ফি পরিশোধে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকি। এই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বকেয়া টিউশন ফি পরিশোধে আমাদের পরামর্শ না মেনে এককভাবে পুরো টিউশন ফি পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করেছে! তার মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে নগদ ও বকেয়ায় টিউশন ফি পরিশোধ করে ফরম ফিলাপ করতে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা না করে কোথাও অভিযোগ করা ঠিক হয়নি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।