৯ মাসে শিক্ষা খরচ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ : পিপিআরসি - দৈনিকশিক্ষা

৯ মাসে শিক্ষা খরচ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ : পিপিআরসি

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, গত বছর জুন থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত শিক্ষা খরচ বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ। শিক্ষার এই খরচ বাড়ায় ৪৬ শতাংশ অভিভাবক শঙ্কিত। গতকাল সোমবার কভিড-১৯ ইমপ্যাক্ট অন এডুকেশন লাইফ অব চিলড্রেন শীর্ষক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে এসব কথা বলেন তিনি।

গত বছরের মার্চ থেকে দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ। এতে শিক্ষায় ঘাটতি, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, মানসিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাসহ নানা দিক উঠে আসে গবেষণায়। পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) যৌথভাবে দেশজুড়ে তিন ধাপে টেলিফোনে এই জরিপ চালায়।

তৃতীয় ধাপে ছয় হাজার ৯৯টি পরিবারের মধ্যে দ্বিতীয় অংশের জরিপে চার হাজার ৯৪০টি পরিবারের স্কুলগামী শিশুদের ওপর গবেষণা করা হয়। স্কুলের ধরন (প্রাথমিক/মাধ্যমিক), স্থান (শহর/গ্রাম) ও লিঙ্গ (পুরুষ/নারী)—এই তিনটি বিষয়ে গবেষণায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হতদরিদ্র, মাঝারি দরিদ্র, ঝুঁকিপুর্ণ দরিদ্র এবং দরিদ্র নয় এমন পরিবারগুলোর তথ্য-উপাত্ত থেকে গবেষণার ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। গবেষণায় উঠে আসে, মহামারি শুরুর আগে মাধ্যমিক স্কুলগামী ২১ শতাংশ ও প্রাথমিক স্কুলগামী ১৪ শতাংশ স্কুলের বাইরে ছিল। এই হার গ্রামের শিক্ষার্থীদের চেয়ে শহরের বস্তিতে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি। বর্তমানে প্রাথমিক স্তরের কমপক্ষে ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষণ ঘাটতিজনিত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

আরও পড়ুন :  দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’

সঠিক পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এই শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দরিদ্র নয় এমন শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাইভেট টিউশনে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এই হার মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৬১ শতাংশ। গবেষণায় উঠে আসে, শহরের বস্তিতে দৈনন্দিন খরচ বেশি। ফলে শহরের বস্তিতে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের কোচিং কিংবা প্রাইভেটে গিয়ে পড়ালেখা করার হার কম। এ ক্ষেত্রে তারা মা-বাবা ও ভাই-বোনদের সহায়তা নিয়ে পড়ালেখা করে। গবেষণায় মহামারিতে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাও উঠে আসে। গ্রামের চেয়ে শহরের ১০ থেকে ২০ বছর বয়সীদের মানসিক চাপ বেশি। গ্রামে এই হার ৮.৪ শতাংশ, শহরে ১৫.৭ শতাংশ। এই মানসিক চাপের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অধৈর্য ভাব প্রকাশ, রাগ কিংবা উগ্র ভাব, বাইরে যেতে ভয় পাওয়া।

ড. হোসেন জিল্লুর তাঁর বক্তব্যে স্কুল বন্ধের ফলে সৃষ্ট তিনটি প্রধান সংকটের কথা তুলে ধরেন। শিক্ষণ ঘাটতি, শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্তরের সামাজিক দূরত্ব।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

তিনি বলেন, ‘আমরা কভিডের কারণে একটি অনিশ্চয়তার মাঝে বাস করছি। কভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আমলে নিয়ে পিপিআরসি-বিআইজিডির পরামর্শ হচ্ছে, শিক্ষার ঘাটতি ঠেকাতে, শিক্ষায় অনাগ্রহ কমাতে এবং অভিভাবকদের শিক্ষাসংক্রান্ত আশঙ্কা দূর করতে পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া দরকার।’

তিনি আরো বলেন, ‘কভিড-পরবর্তী পর্যায়ে মানবসম্পদ পুনরুদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত কার্যক্রম, ক্লাসের বাইরের শিক্ষণ কর্মসূচিকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। নইলে আমাদের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ শুধু শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে অদক্ষ হিসেবে বেড়ে উঠবে।’ সমাধান হিসেবে তিনি তুলে ধরেন, দেশে প্রচলিত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান কর্মসূচিকে শিক্ষা খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে দুই হাজার ৯৬০ কোটি টাকা সরবরাহ করে সরকার দ্রুত এই খাতে অর্থসংস্থান করতে পারে।

অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0077981948852539