এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল করে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্তকে `অপরিণামদর্শী' বলে মন্তব্য করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতারা। একইসাথে এ সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর বলেও মনে করছেন তারা। তারা বলছেন, এ সিদ্ধান্তে প্রকৃত শিক্ষার চাইতে সার্টিফিকেট নির্ভরতাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার বিবৃতিতে বলেন, করোনা মহামারির কারণে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে বলেও জানান। মূল্যায়নের এই পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত নয়। যদিও এর আগে শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরীক্ষা হবে বলেই আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন। কিন্ত হঠাৎ করে গতকাল পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তে লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকন্ঠা বেড়েছে।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা আমাদের দেশের শিক্ষা কাঠামোতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই পরীক্ষার ফলের উপরই মূলত উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি নির্ভর করে। ফলে এইচএসসি পর্যায়ে ছাত্রদের পড়াশোনার মূল্যায়ন অন্য যেকোন পাবলিক পরীক্ষার চেয়ে জরুরি। যে দুটি পরীক্ষার ( জেএসসি এবং এসএসসি) ফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল তৈরির কথা বলা হচ্ছে তার সিলেবাসের সাথে এইচএসসির সিলেবাসের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। আবার অনেকে এক পরীক্ষায় কাঙ্খিত ফল না করলেও পরবর্তীতে ভালো ফল করার সম্ভাবনা থাকে। ফলে এভাবে মূল্যায়নের মাধ্যমে বৈষম্য তৈরি হবে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখলো তা সঠিক পদ্ধতিতে মূল্যায়িত না হওয়ায় পড়ালেখার প্রতি আরও নিরুৎসাহিত হবে। শিক্ষা হয়ে পড়বে আরও সার্টিফিকেট নির্ভর। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রেও এটা হবে অন্তরায়।
নেতারা আরও বলেন, ‘সরকার করোনার অজুহাতে পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সরকার যথাসময়ে লকডাউন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিন, টেস্ট, চিকিৎসাসহ নিশ্চিত করে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। এখন অফিস-আদালত, হাট-বাজার সব কিছু উন্মুক্ত করে মানুষের জীবনকে ঝুঁকি মুখে ঠেলে দিয়েছে। অপরদিকে তারা ছাত্র আন্দোলনের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে না। কিন্তু এ পরিস্থিতিতেও যথাযথ পরিকল্পনা করে এইচএসসির মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নেয়া সম্ভব ছিল। অনেক বিশেষজ্ঞ পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়িয়ে, সিলেবাস-প্রশ্ন সংখ্যা এবং সময় কমিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেও পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব বলে মতামত দিয়েছেন। সরকার তা বিবেচনা না করে যে পদ্ধতিতে ফল তৈরির ঘোষণা দিয়ে চূড়ান্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে এবং এটা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে নানা জটিলতায় ফেলবে।'
তাই বিবৃতিতে, এ পরিস্থিতিতে সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় এইচএসসি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র নেতারা।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
