প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের আর সারাজীবন একই পদে চাকরি করতে হবে না। তাদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায়।
বুধবার (১৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা পিটিআইয়ে ঢাকা জেলার নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের দু’দিনব্যাপী ওরিন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া চলমান, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টির কার্যক্রম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন। প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ১১ এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১৩ গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দক্ষ মানবসম্পদই পারে উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠন করতে। আর সুশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার কারিগর হলো শিক্ষক সমাজ। শিক্ষকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য সরকার দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়া তাদের সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর লক্ষ্যে পদোন্নতিসহ উন্নত বেতন স্কেল দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ঘোষিত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মূল চালিকাশক্তি আজকের শিশুরা। তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের ভূমিকা হবে নিজ সন্তানের মতো। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ ও পুষ্টিমান বাড়ানোর লক্ষ্যে উপবৃত্তি এবং স্কুল ফিডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমান সরকার শিক্ষার সংস্কার, সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নবনিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য চাকরির শুরুতে ইনডাকশন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাকরিকালীন দায়িত্ব ও পাঠদান কার্যক্রম সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়া হচ্ছে। মার্কার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ, উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়ন ও প্রশ্নপত্র কীভাবে প্রণয়ন করতে হয় সে বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের গাণিতিক দক্ষতা বাড়ানোর সম্ভাব্যতা যাচাই শীর্ষক প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং শিক্ষকদের ব্রিটিশ কাউন্সিলে বিদেশি প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিতে সারা বিশ্বে শিক্ষাব্যবস্থা যখন স্থবির হয়ে পড়েছে তখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কার্যক্রমের সুবিধা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘ঘরে বসে শিখি’ অনুষ্ঠান এবং বাংলাদেশ বেতার ও কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে পাঠদান সম্প্রচার করা হচ্ছে। তাছাড়া শিশুরা ছোটবেলা থেকে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারছে, যা ভবিষ্যতে আইটি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের দু’দিনব্যাপী ওরিন্টেশন কোর্সের উদ্বোধনী দিনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহাম্মদ মনসুরুল আলম এবং আতিরিক্ত মহাপরিচালক আতাউর রহমান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. সোহেল আহমেদ ও ঢাকা জেলা শিক্ষা অফিসার আলীয়া ফেরদৌসী বক্তব্য রাখেন। ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ কোর্সে ২০৯ শিক্ষক অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব (লিংক যাবে) করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।