ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত হওয়া উচিত। এবার ভর্তি ফি বাড়ানো কোনোভাবেই ঠিক হবে না, বরং কমানো উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চ শিক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়ে ভর্তি আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার পক্ষে মত প্রকাশ করে তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি না করলে মেধাবীদের উচ্চ শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা যাচাইয়ের জন্য সংক্ষিপ্ত লিখিত পরীক্ষা একটি উত্তম পদ্ধতি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো বিবেচনাতেই এমসিকিউ পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ এফডিসিতে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা মানদণ্ড নিয়ে এই ছায়া সংসদের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান নয়, একই সঙ্গে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানও, যেখানে পরমতসহিষুষ্ণতা ও ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধা থাকতে হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র চর্চার অংশ হিসেবে প্রতিবছর নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত। তাহলে ছাত্ররা তাদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি শিক্ষাসহায়ক অন্যান্য কর্মকাণ্ডেও সম্পৃক্ত হতে পারবে। সামরিক শাসনের সময়ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে না। আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা চাই।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফি ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের দুর্যোগে এটি করা উচিত হবে না।
ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিরোধী দল দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদ্রাসাকে পরাজিত করে সরকারি দল শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজ বিজয়ী হয়।
বিকেলে একই স্থানে দ্বিতীয় পর্যায়ে নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় নগর সরকার নিয়ে অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে অতিথি স্থপতি ইকবাল হাবিব। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ সভাপতিত্ব করেন। প্রতিযোগিতায় বিরোধী দল ইন্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজয়ী হয় সরকারি দল প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটি।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক সবুজ ইউনুস, সহযোগী অধ্যাপক রোকেয়া পারভিন জুঁই, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এসএম মোর্শেদ, সহযোগী অধ্যাপক জোসিন্তা জিনিয়া এবং জেন্ডার বিশেষজ্ঞ নিশাত সুলতানা। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ক্রেস্ট, ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।