সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে মাত্র ২৭ ভাগ শিক্ষার্থী লিখতে পড়তে পারে দাবি করে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সম্প্রতি যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা মনগড়া ও বানোয়াট বলে দাবি করেছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। ব্রাকের প্রকাশিত এ তথ্য সঠিক নয় বলে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান। প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে ‘মনগড়া ও বানোয়াট’ প্রতিবেদন প্রকাশ করায় এনজিওটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।
রোববার দৈনিক শিক্ষাডটকমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন পরিষদের সভাপতি।
এতে বলা হয়েছে, ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন ডেভেলপমেন্টের গবেষণা প্রতিবেদনে পঞ্চম শ্রেণিতে মাত্র ২৭ ভাগ শিক্ষার্থী লিখতে পড়তে পারে। এ চিত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয়। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের পক্ষ থেকে আমি সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান শতভাগ চ্যালেঞ্জের সাথে এ ঘোষণা দিচ্ছি।
বিজ্ঞপ্তিতে ব্র্যাকের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কিছু তথ্য উপস্থাপন করেছে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ। তারা বলছেন, ব্র্যাক ইন্সটিটিউট সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় সরেজমিনে পরিদর্শন না করে এ তথ্য উপস্থাপন করেছেন। ব্র্যাক ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃত্ব তাদের হাতে নেয়ার ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের মুখে ব্যর্থ হয়। এ প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে তাদের মনগড়া প্রতিবেদন ।
পরিষদ আরও বলছে, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্র্যাক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এ কলঙ্কজনক অধ্যায়ের স্বাক্ষর রেখেছেন। শিক্ষার্থী সংকটে কারণে তাদের প্রাথমিক শিক্ষার বিদ্যালয়গুলোর এখন কোন অস্বিত্ব নেই। নানা কারণে তারা প্রাথমিক শিক্ষার ইতিবাচক দিকগুলো সামনে আনে না। করোনা মহামারির ফলে শিশু শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সে শিখন ঘাটতি দূরীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। প্রাথমিকের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এদেশের কৃষকসহ খেটে খাওয়া মানুষের সন্তান। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার কারণে তাদের পরিবারকে বাইরে সময় দিতে হয়। এ কারণে দুর্গমসহ দরিদ্র এলাকার শিশুরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে পারেনা। পারিবারিক স্বচ্ছলতা ছাড়া তাদের শিখন ঘাটতি দূর করা দুরহঃ। সেখানে ব্র্যাক অর্থের পাহাড়ে সমৃদ্ধ বিশ্বখ্যাত এনজিও। তারা অস্বচ্ছল অভিভাবকদের স্বচ্ছলতা এনে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে শিখন ঘাটতি দূর করতে পারে। তা না করে গবেষণার নামে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে সরজমিনে না দেখে অসত্য তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করে চলেছে। আর কতিপয় চিহ্নিত মানুষ তা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দারিদ্র, শিক্ষক সংকট ও শিশু বান্ধব সময়সূচি না থাকায় অভিভাবকেরা শিক্ষার্থীদের কম সময়ের মাদরাসা বা কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ভর্তি করিয়ে থাকেন। ব্র্যাকের গবেষণায় এ চিত্র দৃশ্যমান হয় না। সারাদেশের উল্লেখ্যযোগ্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে জানতে পারলাম, দূর্গম এলাকা, শিক্ষক সংকটে জর্জরিত বিদ্যালয়ে ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়তে লিখতে পারে।
সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ব্র্যাকের এ মনগড়া প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারিকৃত বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। পাশাপাশি এ ষড়যন্ত্রে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের বিরুদ্ধেও। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ এ মনগড়া বানোয়াট প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে। দারিদ্র, শিক্ষক সংকট ও শিশুবান্ধব সময়সূচি শিখন ঘাটতি অন্যতম চ্যালেঞ্জ দূরীকরণের আন্তরিকতা প্রত্যাশা করছি।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।