ই-পাসপোর্ট করবেন যেভাবে - দৈনিকশিক্ষা

ই-পাসপোর্ট করবেন যেভাবে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ই-পাসপোর্ট চালু করতে গতকাল হযরত শাহজালাল (রহ) বিমানবন্দরে ই-গেট স্থাপন করা হয়। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই চালু হচ্ছে ই-পাসপোর্ট। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর নাগরিকদের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ই-পাসপোর্ট ব্যবহারের জন্য গতকাল হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখায় তিনটি ই-পাসপোর্ট গেট বসানো হয়েছে। ই-পাসপোর্ট বহনকারী যাত্রীদের জন্য ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া আগের চেয়ে আরো সহজ হবে।

বর্তমানে ১১৯টি দেশের নাগরিক ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করছে। ই-পাসপোর্ট চালু হলে ১২০তম দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম লেখা হবে। ৩০ জুনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হলে ১ জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন নেওয়া হতে পারে। তবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে চালু করা সম্ভব না হলে, দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্র জানায়, চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৭ সালে ই-পাসপোর্ট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর এবং ১০ বছর। তবে মেয়াদ ও ফি নির্ধারণ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একের পর এক বৈঠক করেছে। ফি নির্ধারণ কমিটি ৪৮ পাতার সাধারণ ই-পাসপোর্টের (৫ বছর মেয়াদ) জন্য তিন হাজার ৫শ টাকা (২১ দিন), জরুরি ৫ হাজার ৫০০ টাকা (সাত দিন) ও অতি জরুরি ৭ হাজার ৫০০ টাকা (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১০ বছরের মেয়াদের ই-পাসপোর্টের জন্য ফি জমা দিতে হবে ৫ হাজার টাকা (২১ দিন), জরুরি জমা ৭ হাজার টাকা (৭ দিন) এবং অতি জরুরি জমা ৯ হাজার টাকা (এক দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে। ই-পাসপোর্ট চালু হলে এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) পাসপোর্ট বাতিল হবে না। তবে নতুন করে কাউকে এমআরপি পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। যাদের এমআরপির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা রিনিউ করতে গেলে ই-পাসপোর্ট নিতে হবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে এমআরপি পাসপোর্ট তুলে নেওয়া হবে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ই-পাসপোর্ট প্রকল্প ৩ কোটি পাসপোর্ট বাংলাদেশে প্রিন্ট করা হবে। সে জন্য উত্তরায় কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানের যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের মতোই ই-পাসপোর্টেও একই ধরনের বই থাকবে। তবে যন্ত্রে পাঠযোগ্য পাসপোর্টের বইয়ের শুরুতে ব্যক্তির তথ্যসংবলিত যে দুইটি পাতা আছে, তা ই-পাসপোর্টে থাকছে না। সেখানে থাকবে পালিমারের তৈরি একটি কার্ড। এতে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ থাকবে। এই চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের মনি) তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। আর ই-পাসপোর্টের সব তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে পিকেডিতে (পাবলিক কি ডাইরেক্টরি)। আন্তর্জাতিক এই তথ্যভান্ডার পরিচালনা করে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও)। ইন্টারপোলসহ বিশ্বের সব বিমান ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই তথ্যভান্ডারে ঢুকে তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর ফলে পাসপোর্ট নিয়ে জালিয়াতি কঠিন হবে।

বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্ট গেট স্থাপন:

পরীক্ষামূলকভাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি ই-পাসপোর্ট গেট বসানো হয়েছে। এটি চালু হলে দেশের প্রধান এ বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া কার্যক্রম আগের চেয়ে আরো সহজ হবে; কিন্তু ই-পাসপোর্ট থাকলে কয়েক সেকেন্ডেই পার হতে পারবে যাত্রীরা। এমনকি আগের মতো যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব ই-গেট দেশে আনা হচ্ছে।

ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ই-গেট এমন একটি প্রযুক্তি, যা দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। ই-গেটে গমন বা আগমনকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিডার ও ক্যামেরার সাহায্যে চিপযুক্ত পাসপোর্ট যাচাই, ফিঙ্গার প্রিন্ট ও রিকগনিশনের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন শেষ করা হবে। ভেরিফিকেশনে ব্যক্তির তথ্য সঠিক থাকলে ই-পাসপোর্ট গেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যাবে।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, কোনো ভুয়া পাসপোর্টধারী ইমিগ্রেশন পার হওয়ার চেষ্টা করলেই ধরা পড়ে যাবেন ই-গেটে। ফলে কোনো অপরাধী পরিচয় গোপন করে ই-গেট অতিক্রম করতে পারবেন না। ই-পাসপোর্ট ই-গেটের একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার সঙ্গে সঙ্গে বাহকের পরিচয় নিশ্চিত করবে। ভ্রমণকারী নির্দিষ্ট নিয়মে দাঁড়ালে অটোমেটিক ক্যামেরায় ছবি তুলে নেবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইসহ সব ঠিকঠাক থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ভ্রমণকারী ইমিগ্রেশন পেরিয়ে যেতে পারবেন। তবে ভুল কিংবা অন্য কারণে লাল বাতি জ্বলে উঠলে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সঠিকভাবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারে সহযোগিতা করবেন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.011151075363159