বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে যশোরে ইন্তেকাল করেন তিনি। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, এসএম সুলতান ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সকালে সুলতান কমপ্লেক্স চত্বরে কোরআনখানি, শিল্পীর মাজার জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী। ছোটবেলায় শিল্পী সুলতানের নাম ছিল 'লাল মিঞা'।
চার-পাঁচ বছর বয়স থেকেই পুঁইয়ের পাকাফলের রঙ আর কাঁচা হলুদ মিশিয়ে ছবি আঁকতেন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়সে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি এঁকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এই গুণী শিল্পী। নড়াইলের জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায় তার আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের সিমলায় তার প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী হয়। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি করাচি থেকে ঢাকায় এসে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল অব আর্টস। এসএম সুলতান বিদেশে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনীসহ দেশে চারটি দলবদ্ধ, দুটি একক এবং লন্ডনে একটি দলবদ্ধ চিত্রপ্রদর্শনী করেন। তেলরং, জলরং, কাঠ-কয়লা দিয়েও ড্রইং করেছেন তিনি।
তিনি ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে 'ম্যান অব দ্য ইয়ার', নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে 'ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট' এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে 'ম্যান অব এশিয়া' খেতাব লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক ও ১৯৯৩ র স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা পান তিনি। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় রাজমিস্ত্রি পরিবারে জন্মগ্রহণ করা কিংবদন্তি এ শিল্পী শহরের কুড়িগ্রামে সুলতান কমপ্লেক্স চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত হন।