আফ্রিকার দেশ ঘানায় পরীক্ষায় নকল আর প্রশ্ন ফাঁস এক বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছরই সিনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার আগের রাতে ফাঁস হয়ে যায় ইংরেজি, বিজ্ঞান আর সমাজবিজ্ঞানের প্রশ্নপত্র। পরীক্ষার দিন সকাল বেলাই একটি জাতীয় দৈনিকে খবর বেরোয়, মাঝরাত থেকে ভোর চারটার মধ্যে অনেক ছাত্রই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র পেয়ে গেছে। তা ছাড়া আরেক বিরাট সমস্যা হচ্ছে পরীক্ষায় নকল।
এখানকার পত্রিকায় এক ছাত্রের উরুর ছবি বেরিয়েছে তাতে পরীক্ষার প্রশ্নের জবাব লেখা। এ নিয়ে ঘানার প্রেসিডেন্ট জন মাহামা স্বয়ং কথা বলেছেন।
কর্তৃপক্ষ তাদের পরীক্ষার মর্যাদা রক্ষা করতে পারছে না। ঘানা থেকে সাংবাদিক এলিজাবেথ ওবেন জানাচ্ছেন, সবচেয়ে দু:খজনক ব্যাপার হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের এসব ঘটনার সাথেশিক্ষক এবং অভিভাবকদের জড়িত থাকার খবর।
স্কুলের ছাত্রদের মুখে নিয়মিতই শোনা যায়, কিভাবে তাদের হাতে অভিভাবকরাই ফাঁস হওয়া প্রশ্ন কেনার জন্য টাকা তুলে দিচ্ছেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে পশ্চিম আফ্রিকার পরীক্ষা সংক্রান্ত কাউন্সিলের একজন কর্তাব্যক্তি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যা ঘটেছে একে প্রশ্ন ফাঁস বলা যায় না, বরং বলা যায় ছাত্ররা ‘পূর্বধারণা’ পেয়েছে যে পরীক্ষায় কি প্রশ্ন আসবে।
এদিকে, শুধু ঘানা নয়- কেনিয়া, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ের মতো আফ্রিকার অনেক দেশেই এই একই সমস্যা। নকল এবং প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে পাস করা ছাত্রদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেটের যে কোন মূল্য নেই – এটা অনেকে বুঝলেও মনে করেন, এতে শুধু বিদেশে গেলেই সমস্যা হতে পারে।
নিজের দেশে এটা কোন সমস্যাই নয়। সাংবাদিক এলিজাবেথ ওবেন বলছেন, এখন তিনি পরিষ্কার বুঝতে পারেন যে কেন এখানে একজন কথিত হাইস্কুল পাস করা ৩০ বছরের লোকও লিখতে বা পড়তে পারে না। এখন আমি বুঝি, কেন উচ্চ সরকারি পদে অধিষ্ঠিত একজন শিক্ষিত ব্যক্তির কথা শুনে তাকে নিরক্ষর মনে হয়। নিশ্চয়ই এই ভদ্রলোকটিও তার স্কুল, কলেজ, বিএ, এমএ বা পিএইচডি পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্রের পূর্বধারণা পেয়েছিলেন।