বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার মানুষের জীবনধারাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। মানুষের ব্যবহারিক জীবনে এসেছে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য মানুষ আর মন্দিরে গিয়ে মাথা ঠোকে না বা অপদেবতার হাত থেকে মুক্তির জন্য ওঝার কাছে ছোটে না। অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরিয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানীদের অনলস সাধনায় আজ আমরা সভ্যতার শীর্ষে উন্নীত হতে পেরেছি। সোমবার (১৩ মে) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন মু. হামিদুর রশিদ জামিল।
আধুনিক জীবনের চরম উত্কর্ষের এবং অফুরন্ত ঐশ্বর্যের মূলে রয়েছে বিজ্ঞান। সকালের ঘুম ভাঙে অ্যালার্ম ঘড়ির ক্রিং ক্রিং শব্দে, বিছানা ছাড়ার পর যে টুথব্রাশ ও পেস্ট নিই সেটাও বিজ্ঞানের অবদান। রান্নাঘরের গ্যাস ওভেন, ইলেকট্রিক কেটলি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনের প্রতিটি সাজ সরঞ্জাম সবই বিজ্ঞানের অবদান।
প্রযুক্তি হচ্ছে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক রূপ। বিজ্ঞানের আবিষ্কৃত তথ্যকে কাজে লাগিয়ে মানুষের নানাবিধ প্রয়োজন মেটানোর জন্য উদ্ভাবিত বিভিন্ন যন্ত্র, উপকরণ এবং ব্যবস্থাই হলো প্রযুক্তি। মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কিংবা জীবনকে সহজতর করার জন্য বিজ্ঞানের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবিত সকল সরঞ্জাম ও ব্যবস্থা প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্ত।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের জন্য প্রয়োজন হয় নতুন প্রযুক্তির। বিজ্ঞানের কোনো জটিল সমস্যা সমাধান করে নতুন তথ্য আহরণের জন্য উদ্ভাবিত হয় নতুন প্রযুক্তি। আবার এসব নতুন আহরিত তথ্য কাজে লাগিয়ে উদ্ভাবন করা যায় আরো নতুন প্রযুক্তি।
সাধারণভাবে বলা যেতে পারে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাঝখানে প্রকৌশলের অবস্থান। বিজ্ঞান হতে প্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে কোনো একটি সমস্যা সমাধানে অভিনব প্রযুক্তিপণ্য উদ্ভাবনের সামগ্রিক প্রক্রিয়া ও কর্মপন্থাই হচ্ছে প্রকৌশল। প্রকৌশলকে বলা যায় বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগের প্রক্রিয়া।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় থেকে শুরু করে সব কাজ হাতে-কলমে করার ফলে আমাদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
পরীক্ষার সময় এন্ট্রি ফরম নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। একবার ডিপার্টমেন্টে, আরেকবার হলে, এরপর ব্যাংকে। এর ফলে আমাদের সবসময় আলাদা চাপের সম্মুখীন হতে হয়। কখন সময় চলে যাচ্ছে, এ চিন্তায় দিন গুনতে হয়। হলে গেলে অনেক সময় কর্মচারী যারা আছেন তারা সবসময় কাজ করার ফলে আমাদের কথা মন দিয়ে শুনতে চান না। অথবা অনেক সময় রাগের দৃষ্টিতে তাকান/কথা বলেন।
রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে সেখানেও এখানে-সেখানে দৌড়াদৌড়ি করে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এবং এ হাতে-কলমে কাজ করার ফলে রেজিস্ট্রি অফিসে যারা আছেন তাদের ও কাজে চাপ সৃষ্টি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তি নেই তাও সত্য নয়, কিন্তু থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। কারণ, যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকত তাহলে সকলকে এ ভোগান্তির শিকার হতে হতো না। অনেক সময় দরকারি জিনিসপত্রের কাজ দেরিতে করার ফলে জরিমানার দায়ভার ও চাপিয়ে দেওয়া হয়।
বিভিন্ন হলে ‘আইটি’ রুম থাকলেও সেগুলোর তেমন একটা সুযোগ-সুবিধা আমরা পাই না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই এ বিষয়টির প্রতি নজর দেওয়া দরকার।
তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের অনুরোধ, সব কাজের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ যদি বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করে তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে যাবে।
লেখক :শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়