সরকারি-বেসরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় ইচ্ছেমতো পরীক্ষার ফি ধার্য করা হচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে এসে একজন বেকার শিক্ষার্থীর চাকরির পরীক্ষার ফি পরিশোধ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা রীতিমতো কষ্টকর। হল-জীবন, মেস-জীবন এবং চাকরির বইপত্র, পরীক্ষায় অংশগ্রহণে যাতায়াতের খরচ জোগাতেই একজন বেকারের হিমশিম খেতে হয়। তার ওপর একেক প্রতিষ্ঠানের একেক রকম পরীক্ষার ফি নির্ধারণ সত্যিই বেদনাদায়ক। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়। নিবন্ধটি লিখেছেন ফজল তাহসান।
বেকারদের কথা যেন ভাবার কেউ নেই। বর্তমানে প্রথম শ্রেণি থেকে তদুর্ধ শ্রেণির চাকরিতে ৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা, নিম্ন শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ফি ধার্য করা হয়। যে পরিমাণ ফি ধার্য করা হয়— একজন চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগের শুরু থেকে শেষ অব্দি কার্যক্রমে এত অর্থ লাগার কথা নয়। ফি নির্ধারণের মাপকাঠি না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক্ষেত্রে নিয়মের কোনো বালাই নেই।
অবাক করা বিষয় হলো বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনও বেকারদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় না ভেবে বিসিএস কিংবা নন ক্যাডার প্রথম-দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির পরীক্ষা ফি বাবদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য কোনো ফি লাগে না চাকরিপ্রার্থীদের। এক্ষেত্রে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুসরণ করতে পারে। অথবা শ্রেণিভেদে পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেয়া হলে ইচ্ছেমতো ফি নির্ধারণের প্রবণতা বন্ধ হবে। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানসমূহ নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য একটি খাত তৈরি করে বাৎসরিক একটি বরাদ্দ রাখতে পারে। তাতে বেকার চাকরিপ্রার্থীরা কিছুটা হলেও চাপমুক্ত থাকবেন।
লেখক : প্রিন্সিপাল অফিসার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা।