সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে বই উৎসব। শুক্রবার সকালে রাজধানীর গর্ভমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলে কেন্দ্রীয়ভাবে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী তাসনিম বিনতে রাশেদের হাতে বই তুলে দিয়ে মন্ত্রী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আনন্দমেলা বসে।
শিক্ষার্থীদের কারও হাতে ছিল নতুন বই, কারও হাতে বেলুন, কারও হাতে জরির ফিতা। বই পেয়েছে—এমন কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, তাদের খুব ভালো লাগছে।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ করে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। এবার ৪ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৭২৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯১ বিষয়ের ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০টি বই বিতরণ করা হচ্ছে।
এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সকাল ১০টায় ‘পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব’ পালন করছে রাজধানীর মিরপুর নম্বরে ন্যাশনাল বাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান প্রাথমিক ও ইবতেদায়ীর কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন।
নিম্নমানের কাগজে অস্পষ্ট বই বিতরণ করা হয়েছে প্রাথমিক শ্রেণির শিশুদের, এমন অভিযোগ বিস্তর।বই উৎসবের মাধ্যমে সারাদেশে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে যাচ্ছে প্রায় ৩৪ কোটি বিনামূল্যের পাঠ্যবই।
পাঠ্যপুস্তক বিতরণের জন্য সারাদেশে পৌঁছে দেয়া হয়েছে আগেই, এমন দাবি এনসিটিবি ও মন্ত্রণালয়ের।
প্রসঙ্গত, ২০১১ খ্রিস্টাব্দ সাল থেকে উৎসবের মাধ্যমে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে সরকার।
২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ ইলেকশনের পর ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি আওয়ামীল সরকারের শিক্ষা ও গণশিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পান নুরুল ইসলাম নাহিদ।
২০০৭ ও ২০০৮ (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) এবং ২০০৯ ও ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সময়মতো বই প্রকাশ নিয়ে দেশিয় প্রকাশকেরা নানা টালবাহানা করেন।
অসাধু প্রকাশকদের সিন্ডিকেটের কাছে হার মানেন নতুন মন্ত্রী নাহিদ।
এরপর বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের পরামশে ও সরকারের উচ্চমহলের সিদ্ধান্তে বিদেশ থেকে বই ছাপিয়ে আনা শুরু হয়।
এরপর থেকেই সময়মতো সবগুলো নতুন বই পাচ্ছেন প্রাথমিক শিশুরা। মাধ্যমিকের শিশুরাও বিনামূল্যে বই পাওয়া শুরু করে ২০১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে। আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম সাফল্য এটি।
১ জানুয়ারি বই উৎসব পালনের সঙ্গে শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. নোমান উর রশীদের নামটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত।