ঘুষ খেয়ে আত্তীকরণ, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ - দৈনিকশিক্ষা

ঘুষ খেয়ে আত্তীকরণ, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

বোরহান হাসান নাঈম |

২০১১ খ্রিষ্টাব্দের জুন থেকে সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন সহকারী অধ্যাপক মো. আইবুর রহমান। দীর্ঘ সময় প্রবাসে থাকলেও নিয়মিত এমপিও সুবিধা পেয়েছেন রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনার এই শিক্ষক। শুধু তাই নয়। ডিভি লটারি জিতে আমেরিকায় অবস্থানকালে তার কলেজটি সরকারিকরণ হয় এবং তিনি অ্যাডহক নিয়োগও পান। এ অসম্ভবকে সম্ভব করেতে আইবুরকে সহায়তা করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী। দৈনিক শিক্ষায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি আমলে নেয় শিক্ষা প্রশাসন। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আইবুরের স্বাক্ষর করা চেক বই পাওয়া গেছে অধ্যক্ষ আতাউলের বিরুদ্ধে। 

মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরী

এদিকে, অ্যাডহক নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আইবুর রহমানকে শোকজ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমেরিকায় থেকে ৫ বছর এমপিও ভোগের হিসেবেও ছাড় দেয়া হয়নি। এমপিও ভোগে সরকারের যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সে পরিমাণ টাকা আইবুরকে কোষাগারে ফেরত দিতে বলেছে মন্ত্রণালয়। আইবুরের দীর্ঘ অনুপস্থিতিকে বৈধতা দেওয়ায় কলেজটির পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে উপাধ্যক্ষ এ কে এম শফিকুল মোরশেদকে। আইবুর এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। 

আরও পড়ুন: আমেরিকায় থেকেও সরকারিকরণ, নিয়মিত এমপিও!

গত ৬ অক্টোবর 'আমেরিকায় থেকেও সরকারিকরণ, নিয়মিত এমপিও!' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় দৈনিক শিক্ষায়। সাংবাদিক বোরহান হাসান নাঈমের লেখা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিভি লটারি জিতে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকায় পাড়ি জমান পাংশা কলেজের সহকারী অধ্যাপক আইবুর রহমান। বিদেশে অবস্থান করেই ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৫ বছরের বেশি সময় এমপিও ভোগ করেছেন তিনি। কলেজটি সরকারি হলে অ্যাডহক নিয়োগের বিষয়েও ছাড় দেননি আইবুর। অধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরীর যোগসাজশে অ্যাডহক নিয়োগ পান তিনি। 

প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহকারী অধ্যাপক আইবুর ও অধ্যক্ষ আতাউল হক চৌধুরী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারের আর্থিক ক্ষতির সমপরিমাণের টাকা ফেরতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে কলেজটির উপাধ্যক্ষকে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মোহা. আতাউল হক খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ ৩ শাখার যুগ্মসচিবকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

এদিকে আইবুরকে পাঠানো শোকজ নোটিশে, তথ্য গোপন করে পাঁচ বছর এমপিও বাবদ নেয়া টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। আর এ দায় 'কেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না' তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে আইবুরকে।

উপাধ্যক্ষ এ কে এম শফিকুল মোরশেদকে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চিঠিতে, আইবুরের ছুটি অনুমোদন এবং পাঁচ বছর এমপিও বাবদ নেয়া টাকা অনুমোদনে যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে তার সমপরিমাণ টাকা সাত কর্মদিবসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হয়েছে উপাধ্যক্ষ শফিকুল মোরশেদকে।

তবে, গত অক্টোবরে কলেজের অধ্যক্ষ আতাউল হক খান চৌধুরী দৈনিক শিক্ষার কাছে দাবি করেন, আইবুর ২০১১ থেকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর অর্থাৎ সরকারিকরণের প্রজ্ঞাপন জারি পর্যন্ত শিক্ষাছুটিতে ছিলেন। বেসরকারি আমলের গভর্নিং বডি তাকে শিক্ষাছুটি দিয়েছে। এরপর কলেজটি সরকারিকরণ হলে তিনি একবার দেশে ফেরেন এবং কলেজ অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে আরও তিন বছর তার কোর্স শেষ করার জন্য ছুটি বাড়িয়ে নেন। ২০১১ থেকে অদ্যাবধি আইবুরের এমপিও বহাল থাকলেও প্রথমে অধ্যক্ষ আতাউল হক তা দৈনিক শিক্ষার কাছে অস্বীকার করেন। গত ৩ অক্টোবর রাতে দৈনিক শিক্ষার প্রশ্নের জবাবে আতাউল বলেন, ‘এমপিও চালু থাকা অবৈধ নয়।’ তবে, দৈনিক শিক্ষার হাতে থাকা নথিতে অধ্যক্ষের দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। গত আগস্ট মাসেও আইবুরের নামে এমপিও গেছে। সেপ্টেম্বর মাসের বেতনের চেক ছাড় হয়েছে গতকাল ৩রা অক্টোবর। অনুপস্থিত আইবুরের জন্য কীভাবে পদসৃজন করা হলো? দৈনিক শিক্ষার এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেছিলেন, “বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।”  

শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি - dainik shiksha কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত - dainik shiksha মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037519931793213