চলমান জেএসসির বাংলা পরীক্ষার নৈর্ব্যত্তিক অংশের একটি প্রশ্নে ভুল থাকায় বিভ্রান্ত হয়েছে লাখ লাখ পরীক্ষার্থী। শনিবার (২ নভেম্বর) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিষয়টি আমলেই নেয়নি শিক্ষা বোর্ডের কেউ। অথচ দুইদিন ধরে দৈনিক শিক্ষা অফিসে শত শত উদ্বিগ্ন অভিভাবক ফো করে জানতে চেয়েছেন ভুলের খেসারত পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে কি-না? সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দৈনিক শিক্ষার কাছ থেকে ভুলের বিষয়টি জানতে পারে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ।
গত শনিবার থেকে (২ নভেম্বর) সারাদেশে শুরু হয় জেএসসি জেডিসি পরীক্ষা। প্রথম দিনে জেএসসির বাংলা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে, জেএসসির বাংলা প্রশ্নের নৈর্ব্যক্তিক অংশের ৯ নম্বর প্রশ্নের জন্য ৪টি বিকল্প উত্তর থাকলেও সেখানে সঠিক কোন উত্তর দেয়া হয়নি। ৯নম্বর প্রশ্নে বলা হয়, ‘নিচের কোন শব্দটি নিত্য স্ত্রীবাচক?’ উত্তরে দেয়া হয়, ‘ত্রয়ো’, ‘স্ত্রৈণ’, ‘বিবি’ ও ‘ধাত্রী’। কিন্তু এর একটি উত্তরও সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: ভুল সেটে জেএসসির ইংরেজি পরীক্ষা, প্রশ্নেও ভুল
এ বিষয়ে রাজধানীর কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহ্ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ৯ নম্বর প্রশ্নে দেয়া চারটি বিকল্প উওরের মধ্যে একটিও সঠিক উত্তর নেই। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হবে 'এয়ো'। কিন্তু প্রশ্নে লেখা আছে 'ত্রয়ো'। খুব সম্ভবত প্রশ্ন তৈরি ও ছাপার কাজে মনোযোগের অভাবে মাত্রা দেয়া হয়েছে। এতে বিভ্রান্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রশ্নের ভুলে প্রথমে বিভ্রান্ত হয়েছি। হাতেগোনা কয়েকজন বুঝতে পেরেছে শব্দটি ‘এয়ো’ হবে। তারা তাই ‘ত্রয়ো’ অর্থাৎ ‘ক’ উত্তর দিয়েছে। তবে, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বুঝতে পারেনি। তাই আমরা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই প্রশ্নটির উত্তর ভুল দিয়েছি বা কেউ কেউ কোনটিই দেয়নি।
অভিভাবকদের মত, প্রশ্ন ছাপায় আরও যত্নশীল হলে এ পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না শিশু শিক্ষার্থীদের।
এদিকে কর্তৃপক্ষের ভুলের দায় শিক্ষার্থীদের কম নম্বর দেয়া যাবে না বলে সচেতন সমাজের। তাদের মতে, কর্তৃপক্ষ ভুল করেছে এ দায় পরীক্ষার্থীদের নয়।
জানতে চাইলে, গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সাবেক বাংলা শিক্ষক গোকুল চন্দ্র দাশ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কর্তৃপক্ষের দোষে ভুল করেছে। তাই, তাদের এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য তাদের এ প্রশ্নের জন্য পূর্ণ নম্বর দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. আবুল বাশার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এ বিষয়টিতে আমরা অবগত ছিলাম না। দৈনিক শিক্ষাডটকমই প্রথম বিষয়টি আমাকে জানালো। আপনি জানানোর পর আমি প্রশ্নটি দেখছি। এখানে ‘এয়ো’ শব্দটি ‘ত্রয়ো’ প্রিন্ট হওয়ায় এ বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। বোর্ডে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হয়ে ভুল করলে সে নম্বর শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য। সে প্রেক্ষিতে ৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে বিভ্রান্ত হয়ে কোন শিক্ষার্থী ভুল করলে সে নম্বর সে পাবে।
তিনি আরও জানান, এরজন্য দায়ী কে তা খতিয়ে দেখা হবে।