জেএসসি পরীক্ষা না হলেও সনদ পাবে পরীক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

জেএসসি পরীক্ষা না হলেও সনদ পাবে পরীক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

করোনভাইরাসের মহামারি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত রাখতে গত মার্চ থেকেই সব স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে। মহামারিতে চলতি বছর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। পরীক্ষা না হলেও জেএসসি-জেডিসির সনদ পাবেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (২১ অক্টোবর) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। 

তিনি বলেন, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা হচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটি সনদ পেতেন। চলতি বছরও পরীক্ষা না হলেও শিক্ষার্থীরা সনদ পাবে। শিক্ষার্থীদের যে উপায়ে মূল্যায়ন করা হবে তা সনদে উল্লেখ থাকবে। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থীদের কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়েও কাজ করছে পরামর্শক কমিটি। 

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করার পরিকল্পনা সরকারের আছে।

অনুষ্ঠানে ডা. দীপু মনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে সমন্বিত পদ্ধতিই এই মুহূর্তে সবচেয়ে যুগোপযোগী বলে মনে করছি। সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া সম্ভব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরাই সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে পারবেন।

মন্ত্রী আরও জানান, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় আয়োজনে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের সাথে আলোচনা করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। আর মেডিকেল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিয়ে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, টিউশন ফিয়ের বিষয়ে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী উভয়কেই সহনশীল হতে হবে। 

আর স্কুলগুলোর টিউশন ফিয়ের বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জোর করে টিউশন ফি আদায় করছে। টিউশন ফ্রি না দিলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না বলেও বলা হচ্ছে। তবে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। আশা করি, প্রতিষ্ঠানগুলো মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করবে।

করোনার কারণে বন্ধ থাকা সারাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে তিনি আরও জানান, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা হবে না। সবাইকে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হবে।   

মন্ত্রী জানান, ৩০ দিনের মধ্যে শেষ করা যায় এমন সিলেবাস তৈরি করেছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এই সিলেবাসটি সব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হবে। প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের সেই সিলেবাসের ওপর প্রতি সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সেই অ্যাসাইনমেন্ট করে স্কুলে জমা দেবেন। শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবেন। কোন মার্কিং বা গ্রেডিং দেয়া হবে না।

উদাহরণ টেনে মন্ত্রী বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী ৭ম শ্রেণিতে উঠতে নূ্ন্যতম যতটুকু শিখনফল অর্জন করতে হয় তা নিশ্চিত করতেই এই পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা যে ক্লাসে এখন পড়ছে সেই শ্রেণিতে কাঙ্খিত শিখনফল অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। 

সংবাদ সম্মেলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং কারিগরি  ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম অংশ নেন। 

মন্ত্রী আরও বলেন, অ্যাসাইনমেন্টগুলো থেকেই শিক্ষকরা দুর্বল শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করবেন। পরবর্তী অর্থবছরে তাদের বিশেষ পরিচর্যার ব্যবস্থা করবেন। কোন শিক্ষার্থী যদি তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে অবস্থান করে, তাহলে সে তার নিকটবর্তী প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইন্টমেন্ট নিতে পারবেন ও জমা দিতে পারবেন। 

ভর্তি ও এসএসসি নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, এবার পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী ক্লাসে যাবেন। আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠানোর উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছি। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘আপনাদের কি মনে হচ্ছে? আমরা টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সাথে যোগাযোগ করছি। কিছু দেশে স্কুল খুলে দিয়েছিল, এখন বন্ধ করে দিচ্ছে। আর শীত নিয়ে সবারই শঙ্কা আছে। 

তিনি আরও বলেন, যেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অনলাইন ক্লাসের সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছি। 

করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য অনলাইন ও টেলিভিশনে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে এ বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, ইবতেদায়ি সমাপনী, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) এবং উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা - dainik shiksha রোজায় স্কুল: শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম, নজরদারিও ঢিলেঢালা পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য - dainik shiksha পেনশন প্রজ্ঞাপনে উদ্বিগ্ন ঢাবি উপাচার্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গবেষণা অনুদান করমুক্ত ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ - dainik shiksha ব্রাজিলে তীব্র গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের নামে প্রতারণা, সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ - dainik shiksha উচ্চ মাধ্যমিকের সমমান পেলো ‘হেট’ আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ - dainik shiksha আটকের ১৩ দিন পরেও বরখাস্ত হননি অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0047528743743896