বাতিল হচ্ছে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ অধ্যক্ষের লিয়েন, পরিচালনা পর্ষদ - দৈনিকশিক্ষা

বাতিল হচ্ছে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ অধ্যক্ষের লিয়েন, পরিচালনা পর্ষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে মঞ্চে ওঠা, অবৈধভাবে নিয়োগ, প্রায় দুই লাখ টাকা মাসিক বেতন-ভাতা গ্রহণ, লুটপাট ও ছাত্রীদেরকে দিয়ে মানবন্ধন ও মিছিল করাতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বাতিল হচ্ছে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ অধ্যক্ষের লিয়েন। বিতর্কিত ব্যক্তিকে কলেজ অধ্যক্ষ পদে বসানো ও লুটপাটে সহযোগিতা করার দায়ে কলেজের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদও বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ নিজ চোখে দেখেছেন পুরান ঢাকার সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ ইফতেকার আলীর যতসব কুকীর্তি। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক হয়েও লিয়েনে অবৈধভাবে বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগানোসহ কয়েকডজন অভিযোগ ইফতেকারের বিরুদ্ধে।

১৯ ফেব্রুয়ারি কলেজের এক অনুষ্ঠানে ইফতেকার আলীকে না দেখার মৌখিক নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী চলে যাওয়ার সাথে সাথে মঞ্চে উঠে বক্তৃতা শুরু করেন ইফতেকার। এতে বিব্রত হন উপস্থিত অনেকেই। ইফতেকারের অনুগত কয়েকজন জামাতপন্থি শিক্ষক ও ছাত্রীকে দিয়ে তার পক্ষে মিছিল করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদেরকে দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানবন্ধন করানোরও অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। ইফতেকারের পক্ষে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের দুইজন কর্তা ও কয়েকজন জামাতপন্থি শিক্ষক। ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীদেরকে উসকে দেয়া হচ্ছে।  তবে, সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়াসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন বিতর্কিত অতিরিক্ত সচিব ইফতেকারের পক্ষে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সূত্র দৈনিক শিক্ষাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।  

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক তদন্ত প্রতিবেদনে লিয়েনে অধ্যক্ষ পদে ইফতেকারকে নিয়োগ দিয়ে কলেজটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ পদে ইফতেকার আলীর নিয়োগ অবৈধ। তাকে প্রচলিত বিধান অনুযায়ী  কলেজটিতে নিয়োগ দেয়া হয়নি। কলেজটিতে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ওঠা ‘টাকার বিনিময়ে নিষিদ্ধ গাইড বই সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণের’ অভিযোগেটির সত্যতাও পেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কর্মকর্তারা। দুই মাস আগে জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনটির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন না করে ফ্রিজে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে থাকা ইফতেকার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। 

এদিকে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের শহিদ মিনার ও ছাত্রী কমনরুমের উদ্বোধন করতে গিয়ে ইফতেকারের অপকর্মের কাহিনী দেখতে ও শুনতে পান। এতে চরম বিরক্ত হন শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী ইফতেকারকে চোখের সামনে না আসার নির্দেশ দেন। যতক্ষণ মন্ত্রী কলেজে ছিলেন ততক্ষণ ইফতেকার নিজ কক্ষে বন্দি ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 


জানা যায়, ইফতেকার আলী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত পরিসংখ্যানের শিক্ষক। তিনি এর আগে ঢাকা কলেজে ছিলেন। তদবির করে লিয়েনে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ পদ বাগান তিনি। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দুই দফায় কোষাধ্যক্ষ পদে থেকে ব্যাপক লুটপাট করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষকও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে।   

অভিযোগের বিষয়ে ইফতেকারের মতামত জানতে চেয়েও পাওয়া যায়নি। 

এসএসসি পরীক্ষার ফল জানবেন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল জানবেন যেভাবে সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির উদ্ভাবক হওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির উদ্ভাবক হওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর নবম পে-স্কেলসহ সরকারি কর্মচারীদের ১০ দাবি - dainik shiksha নবম পে-স্কেলসহ সরকারি কর্মচারীদের ১০ দাবি শিক্ষকদের বেতন আটকে সর্বজনীন পেনশন যোগ দিতে চাপের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকদের বেতন আটকে সর্বজনীন পেনশন যোগ দিতে চাপের অভিযোগ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগের ভাইভা শুরু - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগের ভাইভা শুরু কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় ফের বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় ফের বৃদ্ধি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039660930633545