শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন-ফি ও মেস ভাড়া মওকুফে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সোমবার (১৫ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, প্রকাশনা সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, দপ্তর সম্পাদক সালমান সিদ্দিকী, অর্থ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক বছরের বেতন-ফি ও মেসভাড়া মওকুফে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ, জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে ২৫ ভাগ ও স্বাস্থ্যখাতে ১৫ ভাগ বরাদ্দ, সরকারি উদ্যোগে সকল করোনা রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, “গত ১১ জুন প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হলো। জনগণ আশা করেছিল করোনা দুর্যোগের সময় এ বাজেট জনগণকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে। কিন্তু আমরা দেখলাম জনগণ বরাবরের মতো এবারও প্রতারিত হলো। স্বাস্থ্যখাতে গতবারের চেয়ে এবছর বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৩ হাজার কোটি টাকা। মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে। পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, আইসিইউ নেই। প্রোটেকশনের অভাবে ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য সেবার সাথে যুক্ত অনেকেই মৃত্যুবরণ করছেন। যে পরিমাণ করোনা টেস্ট প্রয়োজন তার তুলনায় অনেক কম পরিমাণ টেস্ট করা হচ্ছে। এককথায় দীর্ঘদিনের অবহেলা ও দুর্নীতির ফলে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।”
বক্তারা আরও বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হলেও অনেক প্রতিষ্ঠান বেতন-ফি পরিশোধ করার জন্য অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। আর যেসকল শিক্ষার্থী মেস ভাড়া করে থাকত তারা গভীর সংকটে পড়ছে। মেস মালিকরা ভাড়া পরিশোধের জন্য ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করছে। শিক্ষার্থীদের বেঁধে মারধরের ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে।”
ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বলেন, “করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে প্রয়োজন ছিল স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সামাজিক নিরাপত্তামূলক খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানো। কিন্তু আমরা দেখলাম এ রাষ্ট্র বড় বড় ব্যবসায়ী- পুঁজিপতি ও সরকারি আমলাদের খুশি করতেই ব্যস্ত। প্রতি বছরের মতো এবছরও সামরিক খাতের বরাদ্দ অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। অবহেলিত কৃষক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা। ভালো নেই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও। এমতাবস্থায় সরকারের এ গণবিরোধী প্রস্তাবিত বাজেটকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।”
এছাড়া সমাবেশে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।