উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

উপবৃত্তির টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

রংপুর প্রতিনিধি     |

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা বিতরণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহম্মেদ এ জন্য দায়ী করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তাদের।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৬০০। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত উপবৃত্তি হিসাবে ওই শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ১৩-২৩ জুলাই পর্যন্ত ওই টাকা বিতরণ করা হয়। উপবৃত্তি হিসেবে শিশু শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রতিমাসে ৫০ এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির প্রত্যেক শিক্ষার্থী ১০০ টাকা পায়। উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে উপবৃত্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের ছবিসহ নামের তালিকা স্থানীয় জনতা ব্যাংক কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নামে ছবিসহ উপবৃত্তির কার্ড তৈরি করে সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের কাছে পাঠায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর সেই কার্ডগুলো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা প্রধান শিক্ষকদের।

গত শনিবার দুপুরে আমরুলবাড়ি-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আফতাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা বিতরণকেন্দ্রে গেলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা। ওই কেন্দ্রে আমরুলবাড়ি-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামালপুর, বাতাসন, চৌপতী ও তালপুকুরের ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টাকা বিতরণ করা হচ্ছিল। দেখা যায়, জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের টাকা দিচ্ছেন জনতা ব্যাংকের শ্যামপুর শাখার কর্মকর্তা কুঞ্জু বাবু ও শওকত আলী।

দেড়টার দিকে সেখানে টাকা নিতে যান প্রথম শ্রেণির ছাত্র সোহেল মিয়ার মা আমবিয়া বেগম (৩৫)। ওই সময় সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন তাঁকে বলেন, সোহেলের উপবৃত্তির ৯০০ টাকা আগেই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় আম্বিয়া কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমার সন্তানের টাকা কে নিল?’ দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী নাজনিন্নাহারের মা ফেন্সি বেগম (৪০) বলেন, ‘প্রতি মাসে ১০০ টাকা হিসাবে আমার মেয়ে ১ বছরে ১ হাজার ২০০ টাকা উপবৃত্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু আমাকে দেওয়া হলো ৬০০ টাকা। আমাদের কোনো কার্ড দেওয়া হয়নি।’

ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আফতাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তির টাকা বিতরণকেন্দ্রে গিয়ে একই রকম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়। সেখানে আফতাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোস্তফাপুর, সাজ্জাদিয়া, আমরুলবাড়ি আসমতপাড়া ও আমরুলবাড়ি-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো অভিভাবকের হাতে উপবৃত্তির কার্ড দেখা যায়নি।

বিকেল চারটার দিকে আমরুলবাড়ি-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী আজিজুল হাকিমের বাবা রিকশাচালক জাহিদুল হক (২৮) অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার সন্তানের টাকা আগেই কে যেন তুলে নিয়েছে।’ এ অভিযোগ সম্পর্কে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল হোসেন বলেন, ‘প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে হয়তো ওই শিশুর নিকটাত্মীয় টাকা তুলে নিয়ে গেছেন।’

সাজ্জাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মোস্তফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তির টাকা কম দেওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন অভিভাবক।

ওই দিন বিকেল চারটার পর ওই টাকা বিতরণকেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন শ্যামপুর জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক সাদেকুল আলম। তাঁর কাছে ২০-২৫ জন অভিভাবক টাকা কম দেওয়ার অভিযোগ করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, অভিভাবকদের হাতে উপবৃত্তির কার্ড থাকলে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হতো না।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062479972839355