পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ও বেশি নম্বর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ টাকা আদায় করছেন শিক্ষকেরা।
পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ৯টি কলেজের ১ হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত শুক্রবার থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সব পরীক্ষার্থীর তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আবশ্যিক বিষয় রয়েছে। আইসিটি বিষয়ে ব্যবহারিকের জন্য ২০০ টাকা করে এবং বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও মানবিক বিভাগের কৃষি, মনোবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে জীববিজ্ঞান বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে আসা রাজলক্ষ্মী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী বিশ্বজিৎ শিকদার জানান, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থ ও গণিত বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রতি বিষয়ে ৩৫০ টাকা করে আদায় করেছেন কলেজের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকেরা। উপজেলার ঘোষকাঠী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী অতিথি বিশ্বাস বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য প্রতিটি বিষয়ের ২৫০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দুজন পরীক্ষার্থী জানায়, শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ২০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে।
নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থী ফাইজুল ইসলাম বলেন, আইসিটির ব্যবহারিক পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আদায় করছেন শিক্ষকেরা। ওই কলেজের আইসিটি শিক্ষক মোমেনা খানম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য কোনো টাকা নেওয়া হচ্ছে না।
নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেন খান বলেন, ‘ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য শিক্ষকদের আপ্যায়নসহ বিভিন্ন খরচবাবদ প্রতি বিষয়ে ৭৫ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কোনো শিক্ষক এর বেশি টাকা নিচ্ছেন কি না, তা আমার জানা নেই।’
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আনোয়ার আজিম বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় কোনো অতিরিক্ত ফি নেওয়ার বিধান নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।