নীলফামারীর ডিমলায় এক কলেজছাত্রীকে বিয়ে করে বিপাকে পড়েছেন এক প্রভাষক। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে অস্বীকার করায় প্রভাষককে বেঁধে রাখেন ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী।
একই সঙ্গে ওই প্রভাষকে স্বামী দাবি করে আরেক নারী থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ওই প্রভাষককে এক নারীর বাসা থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এ নিয়ে দুই নারীর মধ্যে প্রভাষককে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে এলাকাবাসী প্রভাষককে আটক করে বেঁধে রাখেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের গহরপুর বিএমআই কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক আহসান হাবীবকে পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ছাতনাই গ্রামে প্রথম স্ত্রী দাবিদার কলেজছাত্রী ফেরদৌস জান্নাত রুমার বাড়িতে বেঁধে রাখা হয়।
শিক্ষককে বেঁধে রাখার সংবাদ শুনে পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খান, ছাতনাই কলোনী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ, জেলা পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মতিন খান মতি ওই বাড়িতে যান। পরে প্রভাষকের হাতের বাঁধ খুলে দেন।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ছাতনাই গ্রামের মৃত ফজলুল হকের মেয়ে ফেরদৌস জান্নাত রুমার দাবি, ২০১২ সালে গহরপুর বিএমআই কলেজে পড়ার সময় রুমাকে ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আহসান হাবীব প্রেমের প্রস্তাব দেন।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালে রুমাকে আহসান হাবীব বিয়ে করেন। ২০১৪ সালে রুমা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করে নীলফামারীর নার্সিং কলেজ ভর্তি হন।
এরপর তারা দীর্ঘদিন দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে নীলফামারী শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ২০১৫ সালে আহসান হাবীব রাজশাহীতে মোবাইলে প্রেমের সূত্রে গোপনে হাফিজা খাতুনকে বিয়ে করেন। হাফিজাকে বিয়ের পর আহসান হাবীব রুমাকে অস্বীকার করেন বলে দাবি করেন রুমা।
গহরপুর বিএমআই কলেজের অধ্যক্ষ সুলতান আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ওই প্রভাষকের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের বিধিগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, সোমবার রাতে স্বামীকে উদ্ধারের দাবিতে হাফিজা খাতুন থানায় অভিযোগ করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রভাষক আহসান হাবীবকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে পুলিশ।
ডিমলা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইমাদ উদ্দিন ফারুক ফিরোজ বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে কলেজছাত্রীর অভিযোগ শুনে হতবাক হয়ে যাই। ওই কলেজছাত্রীকে প্রতারণা করে বিয়ে অতঃপর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রভাষককে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আটক আহসান হাবীব বলেন, রুমা সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে বিয়ের বিষয়টি সত্য নয়। তবে কী কারণে রুমার বাড়িতে এসেছেন তার উত্তর দিতে পারেননি প্রভাষক।
ডিমলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় পৃথক দুটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এখনো মামলা হয়নি।