ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংগ্রামের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশ করা দুষ্কৃতিকারীদের রেহাই নেই বলে জানিয়েছেন সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৮ বছর ধরে সাফল্যের সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ ছাত্রদের কাছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্র সংগঠন। তাই অপশক্তিদের এজেন্টরা আমাদের বিতর্কিত করতে চায়। কেউ-কেউ ছদ্মবেশে অনুপ্রবেশেরও চেষ্টা করে। তবে তারা ঘাপটি মেরে বেশিদিন থাকতে পারে না। আমাদের নেতৃবৃন্দের চৌকস নেতৃত্বের কারণে তারা ধরা পড়তে বাধ্য। মুন্সিগঞ্জের একজন নেতা সম্পর্কে অভিযোগ আসার সঙ্গে-সঙ্গে আমাদের সংগ্রামী সভাপতি ও বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিনিধিদের সেখানে পাঠিয়েছেন। তাই ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশ করেও বিশৃঙ্খলাকারীদের রেহাই হবে না।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে দেয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি। মাহমুদুল হাসান ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক।
মাহমুদুল হাসান ছাত্রলীগের চলমান প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি কেমন চলছে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ৪ঠা জানুয়ারি আমাদের প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রথম প্রহর থেকেই কর্মসূচি শুরু করেছি, এ উপলক্ষে দুঃস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ ও রক্তদান কর্মসূচি পালন করেছি। ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। সারাদেশে আমাদের প্রত্যেকটি ইউনিটে অতীতের যেকোনো সময়ের থেকে জাকজমকপূর্ণভাবে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
বর্তমান কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে কি ছাত্রলীগের কর্মীরা সন্তুষ্ট? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমান কমিটি দেশরত্ন শেখ হাসিনার ছাত্রদের হাতেই থাকবে ছাত্ররাজনীতি এই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। ২৮ তম জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষভোটে আমাদের নেতৃবৃন্দ নির্বাচিত হয়েছেন। এই কমিটির ন্যূনতম সাংগঠিক দূর্বলতা নেই। সারাদেশে ছাত্রলীগের কোনো ইউনিটে বিশৃঙ্খলা নেই। ছাত্রলীগ নিজস্ব গতিতে চলমান। ছাত্রলীগ নিজেদের মতো করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে। জেলায় জেলায় সচেতনমূলক কর্মসূচি পালন করছে। কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে সহযোগি ও নিয়ামক শক্তির ভুমিকা পালন করছে।
ছাত্রলীগের নেতা হলেই বিলাসী জীবন হাতছানি দেয় এমন অভিযোগ কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘গণমাধ্যমে যেভাবে ছাত্রলীগের সভাপতির হেলিকপটারের ছবি এসেছে তা সঠিকভাবে আসেনি। ছাত্রলীগের ইতিহাস ত্যাগের ইতিহাস। অতীত থেকে বর্তমান খোঁজ নিলেই বোঝা যাবে দেশের পূনগর্ঠনে ছাত্রলীগের কতো ত্যাগ ও তিতিক্ষা। দ্রুতসময়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আমাদের সভাপতিকে হেলিকপ্টার পাঠিয়েছিলেন। তিনি নিজের টাকায় যাননি। দেখুন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বাসে চড়ে কক্সবাজারের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু সে কথাতো গণমাধ্যমে আসে নি। আমরা গণমাধ্যমের সমালোচনা সহ্য করেই রক্তের বিনিময়ে দেশগঠনে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার কাজ করছি। আমাদের নেতারা সংগঠন থেকে যা পান তা দিয়েই কষ্ট করে জীবন-যাপন করছেন। আমাদের তহবিলও অপ্রতুল। তাই আমাদের বিলাসি বললে ভুল হবে।’
২৪শে জানুয়ারি ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীর কাজের অগ্রগতি কেমন? জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এবারের পুনর্মিলনী অতীতের যেকোনে সময়ের চেয়ে জাকজমকপূর্ণ হবে। নানান কারণে কয়েকবছর ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। বর্তমান নেতৃত্ব আবার থেমে থাকা পুনর্মিলনী উৎসব চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা পুনমির্লনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। মঞ্চ তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। সারাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতারা সমাবেশে উপস্থিত হবেন।