প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম তোতার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন খোজরোজ কিতাব মহলের স্বত্ত্বাধীকারী মাওলানা আবদুল মালেক।
কারাদণ্ড হলেই বরখাস্ত হওয়ার বিধান থাকলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বরখাস্ত এড়িয়ে যাচ্ছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর করা ওই আবেদনে বলা হয়, ঢাকা মেট্রােপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালত-২৯, দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা অনুযায়ী অর্থ আত্মসাতের কারণে আনোয়ারুল ইসলাম তোতাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালত এ আদেশ দেন। চাকরিবিধি অনুযায়ী ওই তারিখ থেকেই তোতাকে চাকরিচ্যুত করার নিয়ম থাকলেও তাকে নিয়মিত বেতনভাতাদি প্রদান করা হচ্ছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ মার্চে করা আবেদনে এখনও পর্যন্ত আদালতের রায় কার্যকরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো রকম আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন আবদুল মালেক।
জানা গেছে, ঢাকার পুস্তক প্রকাশক খোশরোজ কিতাব মহলের কাছ থেকে শিক্ষা উপকরণ নিয়ে তা স্কুলে স্কুলে বিক্রি করতেন আনোয়ারুল। বিনিময়ে মোটা অংকের কমিশন পেতেন খোশরোজ কিতাব মহলের কাছ থেকে। দৈনিকশিক্ষার হাতে থাকা আদালতের আদেশের কপিতে দেখা যায়, খোশরোজ কিতাব মহলের মালিক মহিউদ্দিন আহম্মেদের কাছ থেকে মামলার আসামি আনোয়ারুল তার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ২৮ লাখ টাকা নেয়। ২০০৮ সালের ১ নভেম্বর আনোয়ারুল ইসলাম তোতা ১৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু বাকি ১১ লাখ টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় জড়িত খোশরোজ কিতাব মহলের প্রতিনিধি ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক আ কা ফলজুল হক আনোয়ারুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
জানতে চাইলে আনোয়ারুল ইসলাম তোতা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, এটি সম্পূর্ণ একটি মিথ্যা মামলা। এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এ মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে আাপিল করেছেন বলে জানান তিনি। বরখাস্ত এড়াচ্ছেন কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অসীম রহমতে’।
স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, আদালত থেকে রায়ের কপি স্কুলে ও শিক্ষা অফিসে পাঠানো হলেও আনোয়ারুল সুকৌশলে তা গোপন করে আসছেন। বিধি অনুযায়ী তিনি এখন পলাতক আসামি।