পদ ডোমের। নূ্যনতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। সেই পদের জন্য আবেদন করেছেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমনকি পিএইচডির জন্য গবেষণা করছেন এমন একজন। প্রার্থীদের একজনের বক্তব্য, ‘সব জেনেই আবেদন করেছি। ভেবেছিলাম ডোমের চাকরি। তাই প্রতিযোগিতা কম হবে। চাকরিটা পাওয়ার আশাতেই দরখাস্ত করেছি।’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ মেডিকেল কলেজে ডোম পদে আবেদনে ঘটেছে এমনই ঘটনা। এর আগেও দেশটিতে চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীরা। সেই পরীক্ষারও যোগ্যতামান ছিল অষ্টম শ্রেণি। তখনও শোরগোল পড়েছিল দেশজুড়ে। তবে ডোমের চাকরির জন্য এমন শিক্ষাগত
যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের আবেদনের ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
মালদহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রতীপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘শব ব্যবচ্ছেদে সহায়তা করতে দু’জন লোক দরকার। আমরা বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। কিন্তু দেখছি পিএইচডি, স্নাতকোত্তররাও আবেদন করে ফেলেছেন। এটুকু বলতে পারি, আমরা বিস্মিত।’
তবে উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের যে এই কাজে তারা উৎসাহ দেবেন না, তা-ও মোটামুটি বুঝিয়ে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সহকারী অধ্যক্ষ অমিতকুমার দাঁ বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের কাউন্সেলিং করব।’ তার ধারণা, ওই প্রার্থীরা হয়তো বুঝতে পারেননি, ঠিক কী কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরির নিশ্চয়তার কথা ভেবেই বোধহয় অনেকে আবেদন করেছেন।’
তবে রোমান হরফে ‘ডোম’ শব্দটি বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, ডোমের কাজ কিন্তু সহজে করা যায় না। তা শিখতে হয়।
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মতে, ‘যে কোনো পদে আবেদন করার মানসিক বাধা কাটছে, তা ভালো। কিন্তু তা নিজে থেকে হচ্ছে না। রাষ্ট্র বাধ্য করছে। যে সমস্ত পড়ূয়া যোগ্য হয়ে উঠেছেন, তাদের জন্য চাকরি নেই।’
শিক্ষাবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়িও বলেন, ‘গত ২০ বছর ধরে যেভাবে শিক্ষাব্যবস্থা চলছে, তাতে শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকেছে। এটাই তার প্রমাণ।’ আনন্দবাজার পত্রিকা অবলম্বনে।