উসকানিমূলক বক্তব্য এবং নারীদের কটাক্ষ করে প্রশ্নপত্র তৈরি করার অভিযোগে মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইব্রাহিম দেওয়ানকে গতকাল সোমবার আটক করেছে পুলিশ।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সূত্র জানায়, সপ্তম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের প্রশ্নপত্র তৈরি করেন ইব্রাহিম দেওয়ান। গতকাল সকালে এ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বিষয়টি জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌসকে জানান। দুপুরে তিনি পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। বিকেলে ওই শিক্ষককে আটক করা হয়।
সৃজনশীল পদ্ধতিতে তৈরি প্রশ্নপত্রটিতে উল্লেখিত একটি উদ্দীপক ও এর প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হলো-
উদ্দীপক: বাংলাদেশে নারীদের স্বর্গরাজ্য। নারীরা বিভিন্ন কোটার বদৌলতে বড় বড় পদে আসীন। মিস্টার ‘এক্স’ একজন মহিলা সচিব, সে তার স্বামীকে দিয়ে সংসারের সকল কাজ করায় তারপর প্রায়ই নির্যাতন করে। অসহায় স্বামী সন্তানদের মুখের উপর তাকিয়ে নীরবে সব লাঞ্ছনা বঞ্চনা সহ্য করে।
এরপর প্রশ্ন করা হয়—বেগম রোকেয়া নারী-পুরুষকে কিসের সঙ্গে তুলনা করেছেন? উদ্দীপকে মিসেস ‘এক্স’ এর ভূমিকার কোন ইতিবাচক দিক আছে কী? থাকলে বুঝিয়ে বল? গ. ‘এক্স’ এর স্বামী তুমি হলে কী করতে? ব্যাখ্যা কর। মিস্টার ‘এক্স’ এর স্বামীর নীরবে নির্যাতন সহ্য করার প্রতিকার রাষ্ট্রীয় আইনে থাকা দরকার—বিশ্লেষণ কর।
এ ছাড়া, প্রশ্নপত্রের ১ নম্বর প্রশ্নের উদ্দীপকটি এমন- জারিফ খুব নীতিবান ও প্রতিবাদী ছেলে। রাষ্ট্রের অত্যাচার অনিয়ম দেখলে তার রক্ত শিউরে উঠে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী দলের দুর্বল ভূমিকায় সে খুব ক্ষুব্ধ। তাই নিজেই ভিক্ষুক সেজে কৌশলে অন্যায়কারীদের শায়েস্তা শুরু করে।
জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বলেন, ইব্রাহিম দেওয়ানের করা প্রশ্নপত্র রাষ্ট্রবিরোধী ও নারীসমাজের জন্য মানহানিকর।
খবরের সূত্র : প্রথম আলো ১৯ জুলাই, ২০১৬।