নরসিংদীতে ছাত্রনেতাদের হস্তক্ষেপে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নেতারা পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে পরীক্ষার্থীদের নকলে সহায়তা করছেন। এতে বাধা দিলে শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হচ্ছে।
পরীক্ষাকেন্দ্র-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষ ও ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নরসিংদীতে দুটি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। মহিলা কলেজ, শিবপুর সরকারি শহীদ আসাদ কলেজ ও মাধবদী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন নরসিংদী সরকারি কলেজে। এর মধ্যে সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে হস্তক্ষেপ বেশি ঘটছে।
গতকাল রোববার সরেজমিন দেখা যায়, বেলা আড়াইটা দিকে নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মানসুর রহমান এক সহকর্মীকে নিয়ে মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ঢোকেন। অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া এক ছাত্রলীগ কর্মীর উত্তরপত্র জমা নেওয়ার খবর পেয়ে তিনি এসে সেখানে প্রায় ২০ মিনিট অবস্থান করেন। এ সময় তিনি কয়েকজন শিক্ষকের কাছে উত্তরপত্র নেওয়ার কারণ জানতে চান।
মানসুর রহমান বলেন, ‘আমি তো শুধু স্যারদের সঙ্গে কথা বলে চলে আসছি। পরীক্ষায় হস্তক্ষেপ করিনি।’
নরসিংদী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিতে আসেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন, পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। না হলে এ অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়।’
তবে কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কেন্দ্রে বাইরের হস্তক্ষেপ নেই।’
পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা শিক্ষকেরা বলেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকেই নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মানসুর রহমান, ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস ও ছাত্রদল নেতা শরীফ আহমেদ, সাকিব, বাপ্পী, অপুসহ বেশ কয়েকজন নিয়মিত পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকে শিক্ষার্থীদের অসদুপায় অবলম্বনে সহায়তা করেন। শিক্ষকেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়।
নরসিংদী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সর্বশেষ সাবেক সহসভাপতি শামীম নেওয়াজ বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের অনেক নেতা-কর্মী নিজেদের জাহির করতে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকছেন। এটি কাম্য নয়। শিক্ষকেরা কঠোর হলে কেউ এটি করতে পারবে না বলে আমি মনে করি।’