পিপিপির আওতায় শিক্ষা - দৈনিকশিক্ষা

পিপিপির আওতায় শিক্ষা

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

দেশে গত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাসের হার বৃদ্ধিসহ জিপিএ-৫-এর পরিমাণ বাড়লেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর একটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ মেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান)-এর ভর্তি প্রতিযোগিতায়। প্রতিবছর অনুষ্ঠিত এই ভর্তি প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়। তদুপরি ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার দেখা যায় বড়জোর ১০-১২ শতাংশ। অথচ প্রতিটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী। সে ক্ষেত্রে বুয়েট, ঢামেকসহ অন্যান্য উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তিচ্ছুদের কথা সহজেই অনুমেয়। অতঃপর শিক্ষার মানের এই ক্রমাবনতি প্রতিরোধে এবং শিক্ষার মান বাড়াতে দেশে প্রথমবারের মতো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উচ্চ মানের আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের।

এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ২০১০ সালে সরকার কর্তৃক পিপিপি নীতিমালা ও কৌশল ঘোষণার পর এর আওতায় বেসরকারী খাতকে আকৃষ্ট করতে গঠন করা হয় বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ফান্ড লিমিটেড নামের কোম্পানি। সেকেন্ডারি এ্যাডুকেশন ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের সহায়তায় পিপিপি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে। এর আওতায় প্রথমে দেশের বিভাগীয় শহরে, পরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গড়ে তোলা হবে মানসম্মত আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব স্কুল পরিচালনার জন্য সরকার ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ বছর মেয়াদী চুক্তি হবে।

প্রাথমিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মডেল হতে পারে রেসিডেন্সিয়াল মডেল, ভিকারুননেসা, মতিঝিল আইডিয়াল অথবা নটর ডেম কলেজের মতো। এক্ষেত্রে ক্যাডেট কলেজের মডেলটিও মাথায় রাখা যেতে পারে। তবে প্রথম পর্যায়ে যে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা বোধ করি যথেষ্ট নয়। বর্তমান বাজারদরে ভাল জায়গাজমিসহ অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নতমানের আবাসন ব্যবস্থা, তদুপরি আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিসহ সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন নিঃসন্দেহে ব্যয়বহুল এবং সেহেতু বিপুল বিনিয়োগের অপেক্ষা রাখে। আর আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হলে তো কথাই নেই। ভাল শিক্ষা দিতে ও পেতে হলে শিক্ষকদেরও যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধাসহ উচ্চ বেতন দিতে হবে। তা না হলে মেধাবী ও প্রতিভাবানরা এ পেশার প্রতি আকৃষ্ট হবেন না। এটা তো সত্য যে, দেশের বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মান নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়েছে, তেমনি রয়েছে শিক্ষকদের মান নিয়েও। মাউসির এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে অধিকাংশ শিক্ষক, প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ, সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরপত্র বুঝতে অক্ষম। ইংরেজী, গণিত, বিজ্ঞান শিক্ষকের অভাব তো প্রকট। আন্তর্জাতিকমানের আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হলে এসব বিষয় মাথায় রাখা বাঞ্ছনীয় বৈকি।

যে কোন ভাল উদ্যোগ-আয়োজন ব্যর্থ হতে পারে যোগ্য নেতৃত্ব ও সদিচ্ছার অভাবে। নিছক ব্যবসায়িক ও মুনাফার মনোভাব নিয়ে ভাল মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাবে না। এর জন্য সর্বাগ্রে চাই শিক্ষার জন্য নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি উদ্যোগ। যেমন, দানবীরখ্যাত আর পি সাহার ভারতেশ্বরী হোমস, কুমুদিনী মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হাসপাতাল ইত্যাদি। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা কেবল ব্যবসা নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রে ভাল মানুষ গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগ। ভবিষ্যতে দেশ ও জাতি যা থেকে হবে উপকৃত ও উন্নত

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064680576324463