শনিবার বিকেলে ফুলবাড়ীয়া কলেজে শিক্ষকদের ভেতন বোনাসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাঝে ব্যাপক মারামারি হয়েছে। শিক্ষকসহ কমপক্ষে আহত হয়েছে ১২ জন। আহতদের মধ্যে অনার্সের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মাহফুজুল হককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ জুন) কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের ভেতন বোনাস প্রদান করা হয়। বিকেল তিনটার দিকে অনার্সের শিক্ষকরা বোনাস দেওয়া বন্ধ রাখতে বলেন কলেজের প্রধান হিসাব রক্ষককে। এনিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে শিক্ষক ও কর্মাচারীদের মধ্যে মারামারি শুরু। এসময় অনার্সের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মোঃ মাহফুজুল হক, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ নাজমুল হক, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক শফি উদ্দিন আহমদ, দর্শণ বিভাগের প্রভাষক মাহফুজর রহমান, প্রভাষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও কর্মচারীদের মধ্যে কলেজের প্রধান হিসাবরক্ষক আঃ লতিফ খান, আব্দুল হক, মোঃ ইদ্রিস আলী, আবুল কালাম ও নাঈমসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছে। ঘটনার শুনার পর তাৎক্ষণিক ভাবে গভনিংবডির সদস্য ইউএনও লীরা তরফদার কলেজে গিয়ে শিক্ষক ও কর্মচারীদের সাথে বৈঠক শেষে হাসপাতালে দেখতে যান আহত শিক্ষক মাহফুজুল্লাকে।
হিসাব রক্ষক আঃ লতিফ খান বলেন, পরকিল্পিতভাবে অনার্সের শিক্ষকরা কলেজের অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীদের বোনাস বন্ধ রাখতে বলেন। এনিয়ে কথাকাটির একপর্যায়ে অফিস রুমের দরজা বন্ধ করে আমাদের মারপিট করেন। তিনি বলেন চাকুরী জীবনে এই প্রথম শিক্ষকদের হাতের মারখেলাম। এঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কলেজ গভনিংবডির সদস্য ইউএনও লীরা তরফদারের কাছে অনুরোধ জানান।
চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আঃ হক বলেন, অনার্সের শিক্ষকরা পরিকল্পিতভাবে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর আক্রমন করে রক্তাক্ত করেছে। এঘটনার সঠিক বিচার না হলে আমরা আন্দোলনে যাব।
প্রভাষক শফি উদ্দিন আহমদ বলেন, এর আগে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা ১১ হাজার টাকা স্কেলে ঈদ বোনাস নেয় ও সহকারী অধ্যপকরা ১৮ হাজার ৫শ টাকা স্কেলে ঈদ বোনাস নিয়ে থাকেন এবং ননএমপিও শিক্ষরা ১০ হাজার টাকা ঈদ বোনাস নেয়। গভনিংবডি সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ ঈদে এমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা ২২ হাজার টাকা স্কেলে ও সহকারী অধ্যাপকরা ৩৫ হাজার ৫শ টাকা স্কেলে ঈদ বোনাস নিচ্ছে। এনিয়ে অনার্স শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাহফুজুল হক কলেজের প্রধান হিসবরক্ষকের সাথে কথা বলে স্থাগিত রাখতে বলেন। এ কথা বলার কারনে কতিপয় শিক্ষককের নির্দেশে আমাদের মা/ বাবা তোলে গালিগালাজ করে বহিরাগত ২/৩জন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে কর্মচারীরা।
ইউএনও উপস্থিতিতে সকল শিক্ষকরা বলেছেন গতবছর যে ভাবে ঈদ বোনাস নেওয়া হয়েছে এবারও সেইভাবেই বোনাস নেওয়া হচ্ছে, অন্যকোন ব্যাতয় ঘটেনি।
প্রভাষক মাহফুজুল হক বলেন, কর্মচারীরাসহ বহিরাগত একজন আমার উপর চাপাতি নিয়ে হামলা করে মারপিট করেন। এবিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল কালামের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার লীরা তরফদার বলেন, ঘটনার পরপরই কলেজে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানার পর কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মহোদয়কে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভায় বিষটি নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।