বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের(স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা) শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬০ বছর। একজন শিক্ষক লেখা-পড়া শেষ করে অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে অবশেষে শিক্ষকতায় প্রবেশ করেন। প্রাথমিক অবস্থায় শিক্ষানবীশ কাল চলে। বি.এড, এম.এড বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে একজন শিক্ষক যোগ্য শিক্ষকে পরিণত হন। ১২ বছরের অভিজ্ঞতার পরে কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন কেউ কেউ। বাকী শিক্ষকরা বিষয় ভিত্তিক যোগ্য শিক্ষক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করতে থাকেন। অনেক পরিশ্রম মেধা ও মননশীলতা জীবনের মূল্যবান সময় সবকিছু বিসর্জন দিয়ে নিজে যখন ঐ শিক্ষক একজন নামি-দামি শিক্ষকে পরিনত হন ঠিক তখনই তাঁর বিদায়ের ঘন্টা বাজে। আরো অনেক সুন্দর কিছু এ জাতিকে যখন উপহার দিবেন ঠিক তখন ৬০ বছর বয়সের কারণে শারিরীকভাবে অক্ষমতায় পরিণত হন।
একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরলসভাবে জীবনের সবটুকু অর্জন দিয়ে কাজ করতে করতে তিনি যখন একজন সুযোগ্য প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের এলাকা, উপজেলা, জেলা এবং জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হন ঠিক তখনই তাঁর ৬০ বছরের বিদায়ের ঘন্টা বেজে উঠে। অবসর নামক কঠিন পাথর খানা এসে মাথায় ভির করার কারণে তিনিও শারিরীকভাবে অক্ষমতায় পরিণত হন। জাতিকে যখন অনেক কিছু দেয়ার জন্য তৈরী হন ঠিক তখনই বিদায় নিয়ে বাড়ি যেতে বাধ্য হন।
অথচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ৬৫ বছর বয়সে অবসরে যান। অবসরের বয়স ৬৫ বছর থাকার কারণে মানসিকভাবে ওনারা ভাল থাকেন এবং শারিরীকভাবে সক্ষম থাকেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যখন একজন যোগ্য শিক্ষকে পরিণত হয়ে দেশ ও জাতিকে অনেক কিছু দেয়ার জন্য তৈরী হন ঠিক তখনই তিনি অবসরে যাবার কারণে দেশ ও জাতি বঞ্চিত হন। অবসরের বয়স ৬৫ বছর হলে ঐ যোগ্যতম শিক্ষকদের দ্বারা দেশ ও জাতি অনেক উপকৃত হতো এবং শিক্ষক মহোদয়ও তাঁর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রাণ ভরে কর্তব্য পালন করতেন। এলাকাবাসী ও তাঁর নেতৃত্ব প্রাণ ভরে মেনে নিতেন শ্রদ্ধার সাথে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বেসরকারি শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর করা একান্ত প্রয়োজন।
অধ্যক্ষ মোঃ আলমগীর হোসেন খান: মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজ, মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়]