শিক্ষার্থী না থাকায় শেষ পর্যন্ত পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হতে চলেছে কলকাতার ৭৫টি সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যমের স্কুল! স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। পড়ুয়া ও শিক্ষকদের কাছাকাছি অন্য স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। এ সমস্ত স্কুলেই পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে।
দপ্তরের এক কর্তা জানান, শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের সর্বত্রই বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা হু হু করে কমছে। তবে তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় সমস্যাটা ব্যাপক আকার নিয়েছে। রাজ্যের অন্যত্র ছবিটা তুলনামূলকভাবে কম ভয়াবহ। এই শহরের কোনও স্কুলে তিন জন পড়ুয়া, আবার কোথাও এক জন পড়ুয়াও নেই। শিক্ষকেরা সকালে স্কুলে আসেন এবং দিনের শেষে বাড়ি ফিরে যান।’’ দফতর সূত্রের খবর, আর্থিক ক্ষতি রুখতে ওই সমস্ত স্কুলকে পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এক কর্তা জানান, বর্তমানে শহরে সরকার পোষিত স্কুলের সংখ্যা ৫৩২। সেখান থেকে কমে হচ্ছে ৪৫৭। যে হারে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে, তার জেরে আগামী বছরে শহরের আরও অন্তত ৫০টি স্কুলে তালা পড়তে পারে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, ওই স্কুলগুলির ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষককে রেখে দিয়ে বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই স্কুল বা বাড়ির কাছাকাছি এলাকায় যেখানে শূন্যপদ রয়েছে, সেখানে পাঠানো হচ্ছে। তার পরে পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়ে বদলি করা হবে প্রধান শিক্ষককে।
স্কুলশিক্ষা দফতরের অন্দরের খবর, বর্তমানে যে ভাবে ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের রমরমা বেড়েছে, সেখানে টিকে থাকতে পারছে না বাংলা মাধ্যমের এই সমস্ত স্কুল। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু হবে। দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মতে, এ ধরনের ব্যবস্থা আগে নেওয়া হলে কিছু স্কুলকে বাঁচানো যেত।
দক্ষিণবঙ্গের এক জেলা স্কুল পরিদর্শকের মতে, জেলাতেও বাংলা মাধ্যমে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। কিন্তু জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থায় মিড-ডে মিল পড়ুয়াদের স্কুলে নিয়ে আসার পক্ষে সহায়ক। পাশাপাশি, ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের রমরমা না থাকায় এখনও বাংলা মাধ্যমের স্কুল টিকে রয়েছে। তবে সেখানেও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত জেলাস্কুল পরিদর্শকেরা।