শিক্ষার্থী ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে মুক্তিপণ আদায় - Dainikshiksha

শিক্ষার্থী ভিসায় মালয়েশিয়ায় নিয়ে মুক্তিপণ আদায়

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

student-visaস্বপনের বাড়ি কুমিল্লায়। এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ঢাকার রাকিব নামে এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। মাত্র ৫ম শ্রেণি পাশ স্বপনকে মাসে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখান রাকিব। তারপর স্বপ্নেবিভোর স্বপনকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে এসে গোডাউনে আটকে রাখেন।

মালয়েশিয়া আসার জন্যে স্বপনের কাছ থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা নেয়া হয়। এর মধ্যে চুক্তি হয় কলেজ থেকে এক বছরের ভিসা লাগিয়ে দেওয়ার। ঢাকায় এয়ারপোর্টে হয়রানির পর মালয়েশিয়া এয়ারপোর্টেও তিনদিন থাকতে হয় স্বপনকে। কেউ আনতে যাচ্ছিল না তাকে। তিনদিন পর বাংলাদেশি দালাল জাহিদ তাকে নিয়ে আসেন। কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে বের করে পাঞ্চুয়া নামক এলাকায় নিয়ে একটি রুমে নিয়ে আটকে রাখা হয় তাকে। জাহিদের সঙ্গে লেনদেন হয় রাকিবের।

স্বপনের সঙ্গে থাকা মোবাইলসহ সব টাকা কেড়ে নেন দালালরা। এরপর ভাড়াটে লোক দিয়ে চলে নির্যাতন। টানা এক সপ্তাহ দেওয়া হয় পিটুনি। ছুরি দিয়ে হাতে জখম করা হয়। অত্যাচার করে আরো এক লাখ টাকা দাবি করা হয়।

সেই দু:সহ স্মৃতি স্মরণ করে স্বপন বলেন, আমরা বলি, দেশেই তো টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা বলে, টাকা পৌছেনি। এরপর আমাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। নিজেদের জীবন বাঁচাতে আমরা দেশে যোগাযোগ করি। আবারো পরিবার থেকে টাকা পাঠানো হয়। আবারো মহাজনদের থেকে সুদে টাকা নেয় আমার পরিবার। টাকা পাওয়ার পর আমাদের ছেড়ে দেয় এবং পাসপোর্ট ফেরত দেয়। তারপর কাজের জন্য যাই। যেহেতু ভিসাও নেই, তারপরওতো কিছু করতে হবে, খেয়ে চলতে হবে।

কাগজপত্র না থাকলেও নির্মাণ শিল্পে কাজের জন্যে মালয়েশিয়াতে রয়ে যান স্বপন। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় টাকা পেতেন কম। কিন্তু নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ছাড়া ভারী কাজে শরীর খারাপ হয়ে পড়ে স্বপনের। গত ১০ মাসের মধ্যে তিন মাসই কোন বেতন পাননি তিনি। বরং পালিয়ে থাকতে হয়েছে জঙ্গলে। জঙ্গলে থাকার জন্যে তাদের বিছানা এবং পলিথিনের তাঁবু দেয়া হতো। জঙ্গলে পোকা-মশা-মাছির সঙ্গেই ছিল বসবাস। অবৈধ হওয়ায় টাকা দেয় না মালিকপক্ষ। আবার নিজেও চাইতে পারেন না। অনেক কষ্ট করে একবার ৭০ হাজার টাকা পাঠান বাড়িতে।

স্বপন বলেন, আমাকে কোন দিনই কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়নি। আমরা এই আটলান্টিক কলেজে একসঙ্গে ১২ জন এসেছিলাম। কারোরই ভিসা হয়নি। এখনো অনেকেই পালিয়ে রয়েছেন।

ভিডিও শেষ হওয়ার সঙ্গেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন স্বপন। কুমিল্লার মেঘনা থানায় কৃষক বাবার ৪ ছেলে ২ মেয়ের পরিবারে তার অবস্থান ৪র্থ।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে তার প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পুরো টাকাটাই মহাজনদের কাছ থেকে সুদে নেয়া হয়েছে। পরের মাস থেকে সুদসহ শোধ করতে হচ্ছে। দালালরা নেয়ার সময় বলেছিল, মালয়েশিয়া পৌছানোর প্রথম মাস থেকেই আয় শুরু হবে। এর মধ্যে শরীর এখনো অসুস্থ।

প্রতারিত হয়েছেন জানার পর তার পরিবার ঢাকার বনানীতে রাকিবের অফিসে খোঁজ নিয়ে সেখানে তালা দেখতে পান। ঢাকার এক ট্রাভেল কোম্পানির কর্ণধার বলেন, ঢাকায় মালয়েশিয়া দূতাবাসের সঙ্গে যোগসাজসে এসব ট্রাভেল পাশ বের করেন দালালরা। না হলে এ ধরনের কলেজের বিপরীতে ট্রাভেল পাশইতো দেয়ার কথা নয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন প্রতিদিনই একশ’ থেকে দেড়শ’ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভিসায় মালয়েশিয়া প্রবেশ করছে। অনেকেই শিকার হচ্ছেন অপহরণের।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066471099853516