বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) সভা আজ মঙ্গলবার। তবে আজ শুধু অধ্যাপক পদেই পদোন্নতি দেওয়া হবে। এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য এক হাজার ২৯৩ শিক্ষকের তালিকা তৈরি করেছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় পদ না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষকের পদোন্নতি ঝুলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মাউশি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের ৩৩৫ সরকারি কলেজসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের পদ ১৫ হাজার ১১২টি। অধ্যাপকের পদ রয়েছে এক হাজার ৭০টি। এর মধ্যে বিষয়ভিত্তিক পদের সংখ্যা মাত্র ৫২১। আর মোট অধ্যাপক পদের মধ্যে কর্মরত ৯৮০ জন। ফলে অধ্যাপকের মাত্র ৮০টি পদ শূন্য রয়েছে। কিন্তু পদোন্নতিযোগ্য শিক্ষকের সংখ্যা এক হাজার ২৯৩। ফলে অনেকেই পদোন্নতিবঞ্চিত হবেন।
মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা গতকাল সোমবার বলেন, ‘কাল (আজ মঙ্গলবার) ডিপিসির সভা হবে। আমরা পদোন্নতিযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করেছি। এখন কাদের পদোন্নতি দেওয়া হবে সেটা ঠিক করবে কমিটি। তবে যাঁরা পদোন্নতি পাবেন, তাঁদের জন্য সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষের প্রয়োজন নেই। তাই আমরা চাইব, যত বেশিসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া যায়। ’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আজ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে ডিপিসির সভা হবে। তবে এক হাজার ২৯৩ জনের তালিকা হলেও ৩০০ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। কারণ নিয়মিতই অধ্যাপক পদ শূন্য হচ্ছে। তাই শূন্য পদে যেন সহজেই সঠিক কর্মকর্তাকে বসানো যায় সে জন্য অতিরিক্ত প্রায় ২০০ জনকে পদোন্নতি দিয়ে তৈরি রাখা হবে। আর এবার মূলত শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষকরা পদোন্নতি পাবেন। এরই মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের বেশির ভাগ শিক্ষক পদোন্নতি পেয়ে গেছেন। এবার তাঁদের ছাড়াও ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাস, দর্শন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যাসহ বেশ কিছু বিষয়ের শিক্ষকরা পদোন্নতি পাবেন।
জানা যায়, একজন শিক্ষকের ১২ থেকে ১৪ বছর সন্তোষজনক চাকরির পর অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা। কিন্তু ১৪তম ব্যাচের যাঁদের তালিকা করা হয়েছে, তাঁরা এরই মধ্যে ২৪ বছর চাকরি করেছেন। এর পরও সবার অধ্যাপক হওয়ার সুযোগ নেই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, যেসব সহযোগী অধ্যাপককে পদোন্নতির তালিকায় রাখা হয়েছে তাঁদের সবাই চতুর্থ গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। টাইম স্কেল পেয়ে কিছুদিন আগেই তাঁরা এই বেতন গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। আর অধ্যাপকের পদও চতুর্থ গ্রেডের। তাই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পদোন্নতি পেলেও সরকারের আর্থিক সংশ্লেষের প্রয়োজন নেই। বিষয়টি শুধু সম্মানের। কারণ দীর্ঘদিন চাকরি করেও অধ্যাপক না হতে পারাটা বেদনার। তাই এই দিক বিবেচনা করে তিন শর বেশি শিক্ষককে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদেরও নির্দেশনা আছে যত বেশিজনকে পদোন্নতি দেওয়া যায় তা দেওয়ার।
জানা যায়, অধ্যাপক পদে পদোন্নতির পরই সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হবে। সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে প্রায় ৫০০ জন পদোন্নতি পেতে পারেন। বিসিএসের ১৬, ১৭, ১৮ ও ২০, ২১ ও ২২তম ব্যাচের কর্মকর্তারা ডিপিসির বিবেচনায় রয়েছেন। প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে এবার প্রায় এক হাজার ২০০ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। বিসিএসের ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯তম ব্যাচের কর্মকর্তারা এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির মহাসচিব মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, “আমরা ‘এনাম কমিটির’ সুপারিশ অনুযায়ী পদসংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি চাই।