শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন (পরিবীক্ষণ) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে অধিকাংশ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) উপস্থিত না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: সোহরাব হোসাইন। একই সঙ্গে তিনি অনুপস্থিত পিডিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও সচিবের এ অবস্থানকে সমর্থন করে বক্ত দেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ১৩টি প্রকল্পের চলতি বছরের জানুয়ারি-জুনের পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী কোনো কোনো প্রকল্পের অগ্রগতি অসন্তোষজনক এবং কোনো কোনটির অগ্রগতি অসন্তোষজনক বলে উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মনিটরিং এ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন শাখা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৪টি প্রকল্পের মধ্যে অনুষ্ঠানে মাত্র চারজন পিডি উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা আসেননি। তবে, একজন অনুমতি নিয়ে বিদেশ সফরে ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন, ৭০ পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের পিডি মো: তাহিয়াত হোসেন, মডেল স্কুল ও কলেজ স্থাপন প্রকল্পের অধ্যাপক মো: নুরুন্নবী, উচ্চ মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালক যুগ্ম-সচিব শ্যামা প্রসাদ সাহা, মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্পের পরিচালক যুগ্শম-সচিব শরীফ মর্তুজা মামুন।
অনুপস্থিতদের মধ্যে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু ও উপবৃত্তি বিতরণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সেসিপ প্রকল্পের পরিচালক আবু সাইদ শেখ একজন প্রশাসন ক্যডারের অতিরিক্ত সচিব, বই কেনা ও বই পড়ানোর জন্য দায়িত্ব প্রাপ্ত সেকায়েপ প্রকল্পের পরিচালক ড. মো মাহমুদ ্উল হকও প্রশাসসন ক্যডারের যুগ্ম-সচিব। শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত টিকিউআই প্রকল্পের পরিচালকও প্রশাসন ক্যাডারের যুগ্ম-সচিব। আইসিটির মাধ্যমে কলেজ শিক্ষার উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক মো: জসিম উদ্দীন ও অটিজম প্রকলের্পর সালমা বেগম শিক্ষা ক্যাডারের।
তবে, ১৪টি প্রকল্পের অধিকাংশ পরিচালক প্রশাসন ক্যাডারের যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিব।
আলোচনা পর্বে প্রথমে অধিকাংশ পিডিদের অনুপস্থিতির প্রসঙ্গটি তোলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. মহিউদ্দীন খান। এরপর সচিব সোহরাব হোসাইন বক্তৃতা দেওয়ার শুরুতেই মাউশিকে উদ্দেশ করে বলেন, অনুষ্ঠানে পিডিরা নেই কেন? যদি পিডিরা না থাকেন, তাহলে এ অনুষ্ঠানের কোনো মানে হয় না। বিধি অনুযায়ী তাঁদের শোকজ করেন। কেন তাঁরা আমন্ত্রণ পেয়েও আসলেন না? শুধু রঙিন করে অনুষ্ঠান করা, যাদের জন্য অনুষ্ঠান, তাঁরা না থাকলে তা লোক দেখানো ছাড়া কিছুই নয়। বিষয়টি হালকাভাবে নিলে উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।
পরে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সচিব যা বলেছেন, তা ঠিকই আছে। এবারের অভিজ্ঞতা গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচছুক একাধিক প্রকল্প পরিচালক বলেন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে হলে চিঠি দিয়ে জানাতে হয়, টেলিফোনও করা হয়। কিন্তু তাদেরকে জানানো হয়নি। একটি নিমন্ত্রন পত্র পিওনকে দিয়ে পাঠানো হয়েছে যা অনেক প্রকল্প পরিচালকই পাননি।
মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের রয়েছে একাধিক সভাকক্ষ। তারপরও কেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অডিটরিয়ম ভাড়া নিয়ে মূল্যায়ন? এমন প্রশ্নও করেছেন অনেকে।