শ্যামল কান্তির জন্য দৈনিক শিক্ষার কষ্টকথা - দৈনিকশিক্ষা

শ্যামল কান্তির জন্য দৈনিক শিক্ষার কষ্টকথা

সিদ্দিকুর রহমান খান |

বাংলাদেশে সচিবালয়ের সবচেয়ে উঁচু ভবনটির ১৮ ও ১৯ তলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সারাদেশের মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়টির একটু দূরেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। এখানেই এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত হয়। আজ এ লেখা যখন লিখছি তখন মে মাসের এমপিওর সভা চলছে। মোটা দাগে শ্যামল স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ  এরকম: পি আর সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের একজন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করিয়ে দেবেন, এমন আশ্বাস দিয়ে শ্যামল কান্তি ‘ঘুষ নিয়েছেন।’

শিক্ষা অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত এমপিওভুক্তির সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্তত তিনজন কর্মকর্তা অংশ নেন। পদাধিকার বলে সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এমপিওভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। সেই আবেদন যাচা্ই-বাছাই ও অনুমোদনের দায়িত্ব উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারদের। সবশেষে উপ-পরিচালকের সিদ্ধান্ত। মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতি বিজোড় মাসের এমপিওভুক্তির সভায় সারাদেশের ৯জন উপ-পরিচালক কর্তৃক ইএমআইএস সেলে পাঠানো তালিকাটি অনুমোদন হয়।  প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির কথিত ‍‘ঘুষ’  খেয়ে এমপিওভুক্তির সুযোগ কই?

শ্যামল কান্তির জেলে যাওয়ার পর বুধ আর বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ঘোরাঘুরি করেছি। বড় পদে বসা আমলাদের থেকে শুরু করে অফিস সহায়ক পর্যন্ত সবার চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করেছি। যা বুঝেছি তা এখনই লিখতে পারছি না। ৫৭ ধারা আছে না?

তবুও কিছু লিখতে মন চাইছে। সিনিয়র শিক্ষকদের, বন্ধুদের অনেকেই বলেছেন শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম কি লেখে, তা জানতে ও পড়তে চাইছেন অনেকেই।

অনেকবার লেখার চেষ্টা করেছি। একটু লিখি, একটু কাটি। কী দিয়ে শুরু করবো তা-ও ভেবে পাচ্ছি না। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। ল্যাপটপের মনিটর দেখতে পারি না। আগের লেখাগুলো ওলটপালট হয়ে যায়। কান্না আসে।

মনে পড়ে, পাঠ্যবই থেকে ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতাটি বাদ দেয়ার খবর শোনার পর থেকে চলতি বছর ফের কবিতাটি  যুক্ত করা পর্যন্ত অন্তত একশবার লিখেছি আমাদের দৈনিক শিক্ষাডটকম পত্রিকায়।

জেলখানায় শ্যামল স্যারের যদি মনে পড়ে ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতাটি? স্যারের কি মনে পড়বে, ওই কবি কাজী কাদের নেওয়াজও শিক্ষক ছিলেন? তাই হয়তো কল্পনায় শিক্ষকের অমন মর্যাদা একেছেন নেওয়াজ স্যার। বাস্তবের শিক্ষক কেরানীগঞ্জের জেলখানায়। শ্যামল স্যার কি কাজী কাদের নেওয়াজ স্যারকে বোকা ভাববেন?

ফের কান্না চেপে কল্পনা করার চেষ্টা করি, শ্যামল স্যার এখন যেখানে রয়েছেন সেখানকার গন্ধযুক্ত রুটি, আধাসিদ্ধ ভাত, মাছ, ডাল কীভাবে খাবেন? খুব সকালে শ্যামল কান্তির ঘুম ভাঙ্গাবে লাঠি হাতে কেউ একজন। গুনতি মেলাতে হবে তাই। বড় শিকের জানালা। কমন বাথরুম। অংশ বিশেষ কাটা দৈনিক পত্রিকা।’

কল্পনা বেশিদূর এগোয় না। ৫৭ ধারা আছে না?

অন্যের একটা কবিতা আমার নিজের মতো করে বলে লেখাটি শেষ করছি।

‘রাজাদের দিন যাবে, ভজাদের মান যাবে, ওসমানদের নগরী যাবে, বাবুদের গিরি যাবে, স্বর্গের পিঁড়ি যাবে। দরজায় কড়া নাড়ে কে? ঝড়। জনরোষের এটাই নিয়ম।’

সম্পাদক 

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069630146026611