সিলেবাস পড়ায় কোন স্যারে? - দৈনিকশিক্ষা

সিলেবাস পড়ায় কোন স্যারে?

সোলায়মান মোহাম্মদ |

একটি কথা প্রচলিত আছে- বাপে বানায় ভূত, মাস্টার বানায় পুত। দেশকে উন্নতির শিখরে উন্নীত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তারা হচ্ছেন জাতি গড়ার আসল নায়ক। একটি মাধ্যমিক স্কুলে সরকারিভাবে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, যাদের প্রায় সবাই সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী, তাদের মেধা ও শ্রমে তৈরি হচ্ছে আগামী প্রজন্ম। অথচ তারপরও শিক্ষকদের সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে না। শিক্ষকরা বর্তমানে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের দ্বারা নিজ কর্মস্থলেই অবমূল্যায়িত হচ্ছেন।

একটি মাধ্যমিক স্কুলে সাধারণত ১০ থেকে ১২ জনের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকে। এদের মধ্যে ৪ জন অভিভাবক সদস্য, ১ জন সংরক্ষিত মহিলা অভিভাবক সদস্য, ২ জন সাধারণ শিক্ষক প্রতিনিধি (টি আর), ১ জন সংরক্ষিত মহিলা প্রতিনিধি (টি আর), ১ জন দাতা সদস্য ও ১ জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। এরা সবাই মিলে আলোচনা সাপেক্ষে সর্বসম্মতিক্রমে একজন সভাপতি নির্বাচিত করেন। পরবর্তীকালে সভাপতিসহ সবাই মিলে একজন কো-অপ্ট নির্বাচিত করেন।

কমিটির উদ্দেশ্য হল, স্কুল যেন ভালোভাবে চলে, সর্বোপরি স্কুলের সার্বিক উন্নয়নে সবসময় সহযোগিতা করা। কিন্তু এই কমিটি কি সত্যিকার অর্থে তাদের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারছে? অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, দেশের অধিকাংশ স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে যিনি থাকেন, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ৮ম থেকে ১০ শ্রেণী পর্যন্ত হয়ে থাকে। সভাপতি হচ্ছেন স্কুলের অভিভাবক। সুতরাং তার শিক্ষাগত যোগ্যতার যদি এই হাল হয়, তবে তিনি মাস্টার ডিগ্রি সম্পন্নকারী একজন শিক্ষককে দিকনির্দেশনা দেবেন?

দেশের উপজেলা পর্যায়ে এমনও স্কুল আছে, সেখানকার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতি বক্তব্য দেয়ার সময় ইলেক্ট্রিসিটিকে খুব ভাব নিয়ে ‘ইলেকটিটি’ বা ‘ইলেকসিটি’ উচ্চারণ করেন। তা শুনে শিক্ষার্থীরা হাসি আটকাতে পারেন না। এমন একজন সভাপতি কিভাবে একটি স্কুলের অভিভাবক হবেন? আর হলে ওই স্কুলের শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, ভাবুন একবার। কমিটির অন্য সদস্যদের অবস্থা আরও নাজুক। তাদের অনেকেই শুধু রাজনৈতিক কিংবা টাকার দাপটে স্কুল কমিটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হয়ে থাকেন। নিজেদের তারা ওই প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তা ভাবেন এবং বিদ্যালয়কে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মনে করে শিক্ষকদের ওপর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন।

একবার একটি মজার ঘটনা ঘটল। এক স্কুলের অভিভাবক সদস্যের ছেলে পরীক্ষায় খুব খারাপ রেজাল্ট করায় তার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানাল-

: স্যার সিলেবাস ভালোভাবে পড়ায়নি।

ব্যস! অভিভাবক সদস্য তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে প্রধান শিক্ষককে ধমকের সুরে বললেন-

: এই স্কুলে সিলেবাস পড়ায় কোন শিক্ষক?

এই হল কমিটির সদস্যদের শিক্ষা ও জ্ঞানের নমুনা! না হেসে উপায় আছে?

বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কমপক্ষে স্নাতক ও কমিটির অন্য সদস্যদের ইন্টারমিডিয়েট পাস থাকার বিধান করা উচিত। বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা না হলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধীরে ধীরে অন্ধকারে তলিয়ে যাবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

শিক্ষক, শ্রীপুর, গাজীপুর

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0064609050750732