কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেও চলতি বছরের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি ১১ শিক্ষার্থী। সংশ্লিষ্ট দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে তারা প্রবেশপত্র পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলাধীন পাখিউড়ার উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ১১ শিক্ষার্থী প্রথম টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়। দ্বিতীয়বার টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাস করেননি ওই ১১ শিক্ষার্থী। অথচ পাখিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ওই শিক্ষার্থীরা নিবন্ধিত হয়েছিল। ওই ১১ শিক্ষার্থী হলেন, রাজু, সিরাজুল, মোত্তালিব, লিটন, রিপন, সম্রাট, জাহিদুল, স্বপন, মরিয়ম, বেলাল, আবু হোসেন।
ওই ১১ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা সকল বিষয়ে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলাম। আমরা ভালো পরীক্ষাও দিয়েছি এবং পাস করবো। ওই বিদ্যালয়ের স্যারদের কাছে কোচিং না করার কারণে আমাদের টেস্ট পরীক্ষায় ফেল দেখানো হয়েছে। পরে আবার টেস্ট পরীক্ষা দিলেও আমাদের ফের ফেল দেখানো হয়।
পাখিউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুলাল জানান, দুই বার টেস্ট পরীক্ষায় ওই ১১ শিক্ষার্থীরা ফেল (অকৃতকার্য) করার ফলে তাদের ফরম পূরণের কোন সুযোগ ছিল না। তিনি আরো বলেন, ওই শিক্ষার্থীরা অন্য প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ফরম পূরণ করার চেষ্টা করে। ওই ১১ শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করার জন্য জাহিদুল ইসলাম নামের প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বোর্ডে গেলে তখন বোর্ডের এক কর্মকর্তা আমাকে ফরম পূরণ বিষয় ফোন দিলে আমি তা নাকচ করে দিয়েছিলাম। বিদ্যালয়ে কোন ধরনের কোচিং করানো হয় না।
জানা যায়, কৌশলগত ভাবে ওই ১১ শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করে দিবে বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৮হাজার টাকা করে নেন অভিযুক্ত বাইটকামারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। ওই ১১ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৮হাজার টাকা করে প্রায় ৮৮ হাজার টাকা নেন ওই অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। এরপর ওই প্রধান শিক্ষক টালবাহানা শুরু করেন। পরে তিনি টাকাও ফেরত দেননি আর ওইসব শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র হাতে না পাওয়ায় পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে বাইটকামারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মহৎ উদ্দেশে ওই শিক্ষার্থীদের এবছর পরীক্ষা জন্য সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। এজন্য ১১টি আবেদন ফরমে আমি স্বাক্ষর করি। ফরম পূরণ বাবদ আমি ১ হাজার টাকা করে নিয়েছিলাম।
এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোক্তার হোসেন বলেন, আমি এ বিষয় কিছুই জানি না। কোন কিছুর তথ্য জানতে হলে ইউএনও স্যারকে ফোন দেন।
এ প্রসঙ্গে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপঙ্কর রায় বলেন, এ ধরনের কোন লিখিত অভিযোগ কোন শিক্ষার্থী করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।