আধুনিক করতে হবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণকে - দৈনিকশিক্ষা

আধুনিক করতে হবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রশিক্ষণকে

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

আজ ১৫ জুলাই বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস (ডব্লিউওয়াইএসডি)। জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বের তরুণদের বিভিন্ন দক্ষতায় দক্ষ হয়ে ওঠার জন্য আহ্বান জানানো এবং ভবিষ্যতের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ যুবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা। এই দিবসকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) পরিচালনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাস্তবায়িত বাংলাদেশ সরকারের স্কিলস-২১ প্রকল্পের উদ্যোগে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা, ওয়েবিনারসহ নানা আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জুলাই) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনের বিস্তারিত-

সুপারিশসমূহ 

  • পরিবর্তিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রকে লক্ষ্য করে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ননীতি ২০১১–এর পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা।
  • কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত করা।
  • সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে জনপ্রিয় করা এবং এ জন্য সমাজ, বিশেষ করে তরুণদের মনমানসিকতার পরিবর্তনের জন্য কাজ করা।
  • কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকাঠামোকে আধুনিকায়ন করে বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়ে তরুণদের অধিকতর দক্ষ করে তোলা।
  • ডিজিটাল বৈষম্য দূর করে দক্ষতা প্রশিক্ষণের ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতি তথা অনলাইনে দূরশিক্ষণ এবং সরাসরি শ্রেণিকক্ষভিত্তিক হাতে–কলমে শিখনের মেলবন্ধন ঘটানো।
  • সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে সারা দেশে শিক্ষার্থীদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট পৌঁছানো এবং এ ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণ। 
  • শিল্প ও শিক্ষার মেলবন্ধন জোরদার করে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার গ্র্যাজুয়েটদের জন্য শিক্ষানবিশ ব্যবস্থা ছড়িয়ে দেওয়া।
  • নারী এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিসহ সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বৃত্তি, যানবাহনব্যবস্থা ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাউন্সেলিং জোরদার করে কারিগরি শিক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ প্রতিহত করা।
  • প্রবাস থেকে ফিরে আসা দক্ষ কর্মীদের উদ্যোক্তা হতে এবং অদক্ষ, আধা দক্ষদের নতুন ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রণোদনা ও সহায়তার ব্যবস্থা করা।

টুমো পটিআইনেন
কান্ট্রি ডিরেক্টর
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বাংলাদেশ

বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উপলক্ষে এই আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আইএলও বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়নে আধুনিকায়নের জন্য সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করছে। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠা। আমাদের চারপাশের দুনিয়া প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। আমাদেরও তার সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক হতে হবে, যাতে তরুণ জনগোষ্ঠী এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতের চাহিদার জোগান দিতে পারে। এ বছর আমরা খুবই দুরূহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কর্মজগৎ সামনে কোন দিকে যাবে, সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। তবে আমাদের দৃষ্টি কয়েকটি মূল বিষয়ে নিবদ্ধ। একটি কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা এবং আরেকটি হলো এমন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যা তরুণদের সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। গত সপ্তাহে আইএলওর বৈশ্বিক সামিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আদর্শ কর্মক্ষেত্র গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। এ জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়িক উদ্যোগে বিনিয়োগ, শিক্ষায় বিনিয়োগ এবং দক্ষতা তৈরিতে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। দরকার হবে প্রাইভেট সেক্টরকে আগ্রহী করা। অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষার মানোন্নয়ন ও মান নিশ্চিত করাকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। কোভিড-১৯–এর এই সময়ে আরেকটা আলোচিত বিষয় হচ্ছে দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ। এসব প্রবাসীর দক্ষতা দেশের বর্তমান শ্রমবাজারে কোনো অবদান রাখবে কি না, সেটি নিয়ে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা একটি প্রয়োজনীয় কাজ এখন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী
শিক্ষা উপমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদকে, যাঁদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা এই বাংলাদেশ পেয়েছি। মূলত যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে আগামী দিনে আমরা যে ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হব, সেগুলো নিয়ে আজকের এই আলোচনা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিকভাবে একটি দক্ষ জনশক্তিতে আমাদের জনসংখ্যাকে রূপান্তর করার জন্য টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল এডুকেশনের ওপর জোর দিতে বলেছেন। এনরোলমেন্ট ২০০৯ সালের প্রায় শূন্য থেকে আজ ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমরা মনে করি, আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের চেয়ে এটি অনেক কম। এর একটা কারণ হলো আমাদের যুবসমাজের কাছে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করার বদলে আমরা সাধারণ শিক্ষার প্রসারের দিকে বেশি মনোযোগ দিয়েছি। অন্যদিকে আমাদের অর্থনীতি এখন কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে, যার ফলে আমাদের কর্মদাতাদের একটা অভিযোগ হচ্ছে, আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে কর্মদক্ষহীনভাবে কর্মজগতে আসে। আমরা বড়সংখ্যক সাধারণ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছি। কিন্তু অর্থনীতিতে এত বেশি গ্র্যাজুয়েট যুক্ত হতে পারছে না, টিকতে পারছে না। এটা শুধু চাকরির চ্যালেঞ্জ নয়, একই সঙ্গে সামাজিক চ্যালেঞ্জও। এটা তরুণদের নিয়ে যেতে পারে সামাজিক অস্থিরতা, আসক্তি, হতাশা ইত্যাদির দিকে। তাই আশাহীনতার একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে তরুণদের জন্য। আমরা কাজ করছি শিক্ষার্থীদের মানসিকতা বদলাতে, আমাদের কারিগরি শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে। আগামী দিনগুলোতে এই শিক্ষাই সামনে এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যম হবে।

কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য আমরা কিছুদিন আগে ভর্তির বয়সসীমা তুলে দিয়েছি। এখন যে কোন বয়সীরা চাইলে কারিগরিতে ডিপ্লোমায় ভর্তি হতে পারবে এবং নতুন করে দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।

এখানে প্রতিবছর অনেকগুলো আসন ফাঁকা থাকে। অথচ সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের হার জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আমাদের কিছু কাঠামোগত ত্রুটি রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছু বাধা রয়েছে, যা দূর করা প্রয়োজন। আমরা চাই কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে সবার জন্য সুলভ করার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায় কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাকে যুক্ত করতে।

আমাদের নতুন ধরনের শিক্ষায় শিক্ষকের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। দক্ষতা অর্জন কারিগরি শিক্ষার মূল লক্ষ্য। আমরা রাতারাতি এই শিক্ষার মান উন্নত করে ফেলতে পারব না।

আমরা আরও চাই শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে। আমাদের কারিগরি স্নাতকদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। এ জন্য দরকার তাদের শিক্ষানবিশ করার সুযোগ দেওয়ার। এই সংস্কৃতি আমাদের দেশে নেই বললেই চলে। কলোনিয়াল সময় থেকে আমাদের কেরানি ধরনের মানসিকতা আছে। আমরা দেখেছি ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর এক বক্তৃতায় তরুণদের অনুরোধ করেছেন এই মানসিকতা ছেড়ে কারিগরি শিক্ষায় প্রবেশ করতে৷ তিনি বলেছেন, আমাদের দরকার ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, টেকনেশিয়ান। আমরা অনেক কেরানি চাই না। আমরা কৃষিবিদ চাই। এগুলো ছিল তাঁর আহ্বান। কিন্তু আমরা যখন ১৯৭৫ সালে তাঁকে হারাই, এরপর আমরা দেখি, এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা শুধু জনপ্রিয় হতে চেয়েছে। তাই সাধারণ শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠান তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছে। যেটি সঠিক চিন্তা নয়।

নতুন এই কোভিড পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে সাধারণত আমরা যেভাবে চিন্তা করি, সেগুলো পরিবর্তনের এবং নতুন বিশ্বের জন্য আমাদের তৈরি করার, যেখানে অনেক রকম দক্ষতা ও প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাই যেখান থেকেই শিক্ষার্থীরা আসুক না কেন, তাদের দক্ষতার প্রয়োজন হবে। মানসিকতার বদল, মানসিক সক্ষমতা, দক্ষতামূলক শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতা, যেগুলো নতুন অর্থনৈতিক অবস্থায় দরকার হবে, যেগুলো আমরা এই কোভিড পরিস্থিতিতে শুরু করেছি। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

মো. জাহাঙ্গীর আলম
পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড

আমাদের টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ডের অধীনে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৮৭ হাজার। এরা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে, টেকনিক্যাল সেন্টার ও পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানে পড়ছে। কোভিডের কারণে এদের সবার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। গত ১৯ এপ্রিল থেকে আমরা সংসদ টিভির মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস শুরুর উদ্যোগ নিই এবং ১০ মে থেকে সেটা শুরু করি। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা আসলে হাতে–কলমের। ফলে সম্পূর্ণ পাঠ্যক্রমও এর আওতায় আসছে না, যদিও প্রতিদিন আমাদের দশটা করে ফেসবুক লাইভে ক্লাস চলছে। আমরা এডুকেশন টিভি চ্যানেল নামে নতুন একটি চ্যানেল খুলতে যাচ্ছি। আমাদের স্কিলস-২১–এর মডেল ইনস্টিটিউটগুলো এবং আটটি বিভাগীয় পলিটেকনিকে স্টুডিও তৈরি করে কনটেন্ট তৈরিতে প্রায় ৬০ জন শিক্ষককে যুক্ত করেছি। অনেক শিক্ষার্থী পরিবারকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকায় ক্লাস করতে পারে না । ​কিন্তু তাদের বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় পরীক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে ভালো করে।

আমাদের সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তির আওতায় আনা হবে।

সৈয়দ তানভীর হুসাইন
প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা
গ্রামীণফোন

সর্ববৃহৎ টেলিকম অপারেটর হিসেবে বাংলাদেশে এই মুহূর্তে গ্রামীণফোনের সবচেয়ে বেশি ফোর-জি সাইটস আছে। এই মুহূর্তে থ্রি-জি আর ফোর-জির বিস্তার সবচেয়ে বেশি, কোনো সন্দেহ নেই। কোভিডের সময় আমরা দেখছি যে আগে ডেটার ব্যবহার মূলত বড় শহরকেন্দ্রিক ছিল। এখন এটা শহর থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। অনলাইন শিক্ষার প্রচলনের ফলে ডেটা ইউজেস বাড়ছে। বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কোলাবোরেশনে বা কোনো পার্টনারশিপের মাধ্যমে এডুকেশনাল কোনো স্কিম বা প্যাকেজ আনা যায় কি না, তা নিয়ে আমাদের টিম কাজ করছে। তবে যা–ই করা হোক না কেন, সেটা যেন টেকসই হয়, সেটাই বিবেচ্য। আর তা হতে হবে রেগুলেটরের নির্দেশিত পথে। ডেফিনেটলি আমরা চেষ্টা করব, যাতে শিক্ষার্থীদের আমরা সাহায্য করতে পারি। বলা যায় যে কোভিডই আমাদের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে অনেকখানি নিয়ে আসছে।

হাবিবুল্লাহ এন করিম
ভাইস প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশ এমপ্লয়ারস ফেডারেশন

চার্লস ডিকেন্সের একটা কথা আছে, এখনই সবচেয়ে ভালো সময়, এখনই সবচেয়ে খারাপ সময়। বর্তমানে আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। যুবসমাজের জন্য একদিকে এটি কঠিন সময়। অন্যদিকে এটি সম্ভাবনাময় সময়। বর্তমান প্রজন্ম তিনটি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। কম্পিউটার বিপ্লব, ইন্টারনেট বিপ্লব ও মোবাইল ফোন বিপ্লব। এ বৈপ্লবিক পরিবর্তনের কারণে পাঁচ বছর আগে যা শিখে এসেছে, তা এখন প্রযোজ্য হবে না। আগে পঞ্চাশ বছর ধরে মানুষ এক পেশায় কাটিয়ে দিত। এখন পরিস্থিতি এ রকম নয়। এটা একটা চ্যালেঞ্জ।

আরেকটি হলো ডিজিটাল চ্যালেঞ্জ। অনেক পরিবারের হয়তো ডিজিটাল ডিভাইস নেই। তারা যাতে সমান সুযোগ পায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে। ইন্টারনেট ও ডিভাইসের জন্য সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সামাজিক–সাংস্কৃতিক ট্যাবু রয়েছে। এ থেকে আমাদের বের হতে হবে। দেশের স্বার্থে, যুবসমাজের স্বার্থে কারিগরি শিক্ষাকে মেইনস্ট্রিম করা দরকার। বেসিসের সদস্য কোম্পানিগুলো প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের ইন্টার্ন হিসেবে নেয়। তবে অন্যান্য সেক্টরে এই প্রবণতা কম। বাংলাদেশ এমপ্লয়ারস ফেডারেশনের সদস্যদের সঙ্গে কারিগরি শিক্ষার্থীদের যুক্ত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা কারিগরি প্রশিক্ষণ নিতে পারলে আরও দক্ষ হয়ে উঠবে।

তাহসিনাহ আহমেদ
নির্বাহী পরিচালক
ইউসেপ বাংলাদেশ

ইউসেপ বাংলাদেশ প্রায় পাঁচ দশক ধরে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করছে। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল থেকে দারিদ্র্যের কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের নিয়েই আমাদের কাজ। তাদের জন্য শর্ট কোর্স, প্রশিক্ষণ ও বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েদের অনেকেরই আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যায়। এ জন্য সাইকো-সোশ্যাল কাউন্সেলিং এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা আছে। ঝরে পড়া ছেলেমেয়েরা কিন্তু যা পড়েছে, তা দ্রত ভুলে যায়। তাদের জন্য ইউসেপে রেমিডিয়াল অব লিটারেসি অ্যান্ড লাইভলিহুড স্কিলস (রোলস) নামে একটা বিশেষ মডেল আমরা দুই বছর পাইলট করেছি। এটা একটি রিফ্রেশিং ট্রেনিংয়ের মতো। এতে খুব দ্রুত তারা ভুলে যাওয়া দক্ষতা আবার মনে করতে পারে। এটি অন্যরাও বিবেচনা করতে পারে।

মেয়েদের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যাপারে আমাদের নজর দিতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করা প্রয়োজন। কারণ, শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ যে সময়ের হোক না কেন, যতক্ষণ না নিজের আর্থসামাজিক উন্নতি হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু মা–বাবা কনভিন্সড হন না।

প্রকৌশলী মো. সাকাওয়াৎ আলী
পরিচালক (প্রশিক্ষণ)
বিএমইটি

কোভিড ও মাইগ্রেশন দুটিই এখন গ্লোবাল সিচুয়েশন। কোভিড সিচুয়েশনে যারা বাংলাদেশ ফিরে আসতে চায় বা যারা ফিরে আসছে, তাদের জন্য আমাদের বিএমইটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের পূর্বতন দক্ষতার স্বীকৃতি (Recog*itio* of prior lear*i*g—RPL) দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাদের উচ্চতর দক্ষতা রয়েছে, তাদের এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভে সহায়তা করা যায়। বর্তমানে বিএমইটির ৭০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু অনলাইনে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয় না। এ জন্য আমাদের ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতিতে যেতে হয়। এখানে ফেস টু ফেস ট্রেনিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। তাকে ফিজিক্যালি প্রশিক্ষণের জন্য আসতেই হবে।

কিশোর কুমার সিং
চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার
স্কিলস–২১ প্রকল্প, আইএলও

প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি, প্রস্তাবিত সুপারিশগুলো নিয়ে আমরা কারিগরি শিক্ষার আধুনিকায়নে সবাই মিলে কাজ করতে পারব।

কারিগরি অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস ২০২০ উপলক্ষে স্কিলস-২১ প্রকল্পের উদ্যোগে সারা দেশের কারিগরি স্কুল ও কলেজ, কারিগরি সেন্টার, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং অন্যান্য অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রাফিক ডিজাইন ও ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন ও মেনটেন্যান্স বিষয়ে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় মোট ৩ হাজার ১০৬ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৩৩৮ জন ছাত্রী। চূড়ান্ত পর্ব থেকে দুই ক্যাটাগরিতে ১০ জন করে মোট ২০ জন শিক্ষার্থী বিজয়ী হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে দুই ক্যাটাগরির শীর্ষ ছয় শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষানবিশের ব্যবস্থা এবং সব বিজয়ীর জন্য রয়েছে পুরস্কার। গ্রাফিক ডিজাইন ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অভিষেক গোলদার এবং ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন ও মেনটেন্যান্স ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মো. তারিকুল ইসলাম।

ফলাফল পাওয়া যাবে এই ঠিকানায়—http://ilo.o*li*equiz.io

বাংলাদেশের দক্ষতা উন্নয়নের এক দশক
কিশোর কুমার সিং ও মানস ভট্টাচার্য

২০১১ সালে প্রণীত জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ননীতি (এনএসডিপি) প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতার বিস্তার এবং উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। প্রাথমিকভাবে এই নীতি প্রণীত হয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার কারিগরি শিক্ষাসংস্কার প্রকল্পে। পরবর্তী সময়ে এই নীতি দেশের দক্ষতা খাতে উন্নয়নের পাশাপাশি উদ্ভাবন খাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তনশীল একটি আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা, বেসরকারি খাতে কারিগরি শিক্ষার চাহিদা বৃদ্ধি, আধুনিক পাঠ্যক্রম ও মূল্যায়নব্যবস্থা, জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত দক্ষতা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ নেওয়ার ব্যবস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ বৃদ্ধি এবং সুবিধাবঞ্চিত ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি।

বর্তমানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন যোগ্যতা কাঠামো তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। নতুন এই কাঠামোতে প্রযুক্তিগত ও সাধারণ শিক্ষাকে একীভূত করা হবে। যার ফলে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সনদের মান বাড়বে এবং দক্ষ কর্মীরা বিদেশে ভালো বেতন, নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। নতুন এই কাঠামো কারিগরি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বিশাল অবদান রাখবে।

২০১১ সালের পর বিভিন্ন পরিবর্তনের মধ্যেও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা তাদের সব অংশীদারের সঙ্গে একত্রে বাংলাদেশ সরকারের ২০১১ সালের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতির উন্নয়ন বা পরিমার্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দ্রুত অগ্রসরমাণ বিশ্বে পরিমার্জিত এই নীতি বাংলাদেশের ২০৩০–এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে সংগতিপূর্ণ কাজের ভবিষ্যৎ; সবুজ অর্থনীতি, ‘ডিজিটাল বৈষম্য’ এবং নিত্যনতুন উদ্ভাবন নিশ্চিতে কাজ করবে। মূল ভিত্তি অপরিবর্তিত রেখে বাংলাদেশের দক্ষতা নীতিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক, চাহিদাচালিত, বাস্তবায়নযোগ্য হতে সাহায্য করবে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী কালে দক্ষতা প্রশিক্ষণ পুনর্নির্মাণে এবং অন্য সুবিধাগুলো কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করার মাধ্যমে আইএলওর স্কিলস–২১ প্রকল্প কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে একটি সময়োপযোগী টিভেট কোভিড রেসপন্স প্ল্যান তৈরি করতে সহায়তা করে।

কারিগরি শিক্ষা খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি কোভিড পরিস্থিতির কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যদিও এটা অনেক বড় একটা সুযোগও বটে। অংশীদারদের অংশগ্রহণে কোভিড সংকটে প্রাপ্ত তহবিল এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নই পারবে মহামারির এই সংকট কাটিয়ে দক্ষতার খাতকে স্থিতিশীল করতে।

আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে প্রতিদিনই অনেকে কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন, শোভন কাজের সুযোগও কমে আসছে। এই অবস্থায় কর্মহীন মানুষ, যাঁদের মধ্যে ফিরে আসা অভিবাসীরাও রয়েছেন, তাঁদের বিদ্যমান দক্ষতার পুনর্বিবেচনা এবং একই সঙ্গে চাহিদাসম্পন্ন নতুন দক্ষতাও রপ্ত করার প্রয়োজন হবে।

আগামী দশকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে কর্মসংস্থান খাতের জন্য প্রতিযোগিতামূলক ও দক্ষ জনবল তৈরি করতেই হবে। এর কোনোই বিকল্প নেই।

লেখকদ্বয় স্কিলস-২১ প্রকল্পের যথাক্রমে চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও পলিসি স্পেশালিস্ট।

প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরে আসা : বিপদের মধ্যে মহাবিপদ
কিশোর কুমার সিং ও লিগায়া ডুমাওয়াং

সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরে আসার বিষয়টি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে মারাত্মক আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। করোনাভাইরাস মহামারির বিধ্বংসী প্রভাবে বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে লাখ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হচ্ছেন এবং তাঁরা দেশে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রথমবারের মতো প্রত্যাগত শ্রমিকের দলটি ফেব্রুয়ারিতে চীন আর ইতালি থেকে এসেছিল। চলতি মাসে ফেরার অপেক্ষায় আছেন আরও অনেকে।

গত মার্চে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯-কে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এবং দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া থেকে হাজার হাজার মানুষ ফিরতে থাকেন। এই শ্রমিকদের অধিকাংশই দক্ষ ও আধা দক্ষ। তাঁরা সেখানে রাজমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, ড্রাইভার, গৃহকর্মী, মালি, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বিক্রয়কর্মীর মতো পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

প্রত্যাবর্তনকারীদের এই অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশেই অনেক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। অনেক প্রত্যাবর্তনকারীর পর্যাপ্ত সঞ্চয় বা কর্মসংস্থান–সুবিধা নেই এবং তাঁরা এ সংকটে সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরেছেন। তাঁদের অনেকেই প্রাথমিক অভিবাসন ব্যয় মেটাতে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন, যা থেকে তাঁদের মুক্তিও হয়নি। অনেকেই আবার প্রবাসে ছিলেন অবৈতনিক অথবা অনিয়মিত মজুরির শ্রমিক। ফলে দেশেও টাকা পাঠাতে পারেননি তাঁরা।

এই ফিরে আসা শ্রমিকেরা চলমান সংকটের মধ্যে আরেকটি সংকটে পড়েছেন। কাজ হারানোর ফলে তাঁরা এবং তাঁদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, চলমান কোভিড-১৯ সংকট ২০২০ সালে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেবে । যা টাকার অংকে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। এই কোভিড মহামারিসৃষ্ট মন্দা লাখ লাখ লোকের জন্য একটি বড় ধরনের ক্ষতি। এর ফলে বাংলাদেশের অনেক পরিবার দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে।

আন্তর্জাতিক স্থবিরতার কারণে ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সম্মুখীন হচ্ছেন, হবেন। এই সংকটের ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি তাঁরা মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পাশাপাশি সমাজে তাঁদের পুনর্বাসনে সহায়তার প্রয়োজন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (আইএলও) স্কিলস-২১ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছে । এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে অভিবাসীদের পুনর্বাসন এবং সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ।

স্থানীয় অংশীদারদের সহায়তায় প্রকল্পটি ফিরে আসা শ্রমিকদের টেকসই পুনর্বাসনের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ইতিমধ্যে চাহিদা আছে, এমন পেশার কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও বাজারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একাধিক সংশ্লিষ্ট (টিভেট) প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করছে ।

স্বাস্থ্যসেবা, ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্যপ্রযুক্তি, খুচরা ব্যবসা এবং কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো বাজারে চাহিদা আছে, এমন দক্ষতা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং এর সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে আরও কর্মসংস্থান এবং আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য কাজ করছে প্রকল্পটি। এই স্কিম শ্রমিকের দক্ষতা, তাঁদের সনদের মেয়াদ এবং ক্ষুদ্র বা মাঝারি উদ্যোগের জন্য বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাই করবে। প্রাতিষ্ঠানিক সনদ না থাকা দক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের সনদপ্রাপ্তি ও কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থাও করা হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি সরকার, উন্নয়ন–সহযোগী এবং সমাজকে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছে। এ ক্ষেত্রে সব ধরনের পদক্ষেপই নিতে হচ্ছে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে। সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে একটি ‘সামগ্রিক সরকার’ ও ‘সামগ্রিক সমাজের রূপে’। এই মুহূর্তে কোটি কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা সত্যিকার অর্থেই বিপদগ্রস্ত। সরকারগুলোর দৃঢ় অঙ্গীকার এবং জনগণের সহনশীলতাই পারে এই সংকট থেকে পরিত্রাণ দিতে।

লেখকদ্বয় স্কিলস-২১ প্রকল্পের যথাক্রমে চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ও টিভেট স্পেশালিস্ট।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046460628509521