আন্দোলনের আঁতুড়ঘর ছিল জগন্নাথ - দৈনিকশিক্ষা

আন্দোলনের আঁতুড়ঘর ছিল জগন্নাথ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণা করেন। তখন আমি জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়) ভিপি। সারা দেশের আন্দোলনের মূল আঁতুড়ঘর ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তখন বঙ্গবন্ধু আমাকে ডেকে পাঠালেন। তিনি বললেন, ‘রাজু! আমি ছয় দফা দিচ্ছি। তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’  শনিবার (১৪ মার্চ) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আমি বললাম, ছয় দফা বিশ্বাস করি না। এক দফার কথা বলুন। স্বাধীনতার কথা বলুন। তাহলে আমরা আছি। বঙ্গবন্ধু চিৎকার দিয়ে উঠলেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদৃষ্টি ছিল। বঙ্গবন্ধু আমার পিঠে হাত দিয়ে বললেন, ‘এই ছয় দফাই তোর স্বাধীনতা এনে দেবে।’ তখন বঙ্গবন্ধুর পা ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, তার ছয় দফা আমরা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেব। সে অনুযায়ী জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে লেবার এরিয়ার শ্রমিকদের নিয়ে আমার প্রথম মিটিং হয়। সভাস্থলে যাওয়ার পর ১৫ মিনিট আগে পুলিশ আমার কাছ থেকে মাইক কেড়ে নেয়। বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে খালি গলায় বক্তৃতা দিতে শুরু করলাম।

সেই মিটিংয়ে বলেছিলাম, সেই দিন কংগ্রেসের কাছে ১৪ দফা পেশ করেছিল মুসলিম লীগ। দাবি আদায় হয়নি বলেই পাকিস্তান হয়েছিল। আজ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ছয় দফা পেশ করলাম। যদি না মানে তাহলে পূর্ব পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানই থেকে যাবে। আর পশ্চিম পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তানই থাকবে। ভেঙে যাবে মাঝখানের মিলনসেতু। এরপর সারা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর মূলমন্ত্র ছড়াতে ময়মনসিংহ রওনা দিই। খবর পেলাম সেখানে আমাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ ওতপেতে রয়েছে। আমি তখন ছাত্রদের সঙ্গে মিটিং করতে জামালপুর কলেজে চলে যাই। তখন জামালপুরের আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ ছয় দফার কথা শুনে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমাকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। কলেজের গেটের সামনে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ ছিল। তার নিচে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শুরু করলাম।

ধীরে ধীরে ছাত্ররা জড়ো হতে লাগল। ছাত্রদের সামনে ছয় দফা তুলে ধরলাম। সেখান থেকে সরাসরি ঢাকায় চলে এলাম। ছয় দফা আদায়ে জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুললাম। ঠিক সেই সময় এলো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তখন আমিই প্রথম জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদের নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) সামনে ছয় দফার পক্ষে বক্তৃতা দিই। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবি জানাই। তারপর তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে গণআন্দোলন শুরু হলো। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাই। এরপর ১৯৭০ সালের নির্বাচন। তখন মওলানা ভাসানী বললেন, ‘ভোটের আগে ভাত চাই।’ সেই দিন বঙ্গবন্ধু যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতেন, তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।

অনুলিখন : সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী।

লেখক : রাজিউদ্দিন আহম্মেদ রাজু।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069699287414551