বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় পলাতক চার আসামির একজন আজ (রোববার, ১২ জানুয়ারি) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। তার নাম মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে অর্মত্য।
আদালত সূ্ত্রে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে পলাতক আসামি অমর্ত্য আদালতে আত্মসমর্পণ করলে, আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে। এরপর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ৫ জানুয়ারি বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার চার পলাতক আসামির নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের নির্দেশ দেন আদালত। সেদিন পলাতক চার আসামির সম্পদ জব্দ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন ঠিক ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়। তাদের নিজেদের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ নেই বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় পলাতক চার আসামির সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। একই সঙ্গে সেদিন তাদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির আদেশ দেয়া হয়। বাকি তিন আসামি মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক আছে।
বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ক্রিকেট স্টাম্প, মোটা দড়ি দিয়ে নির্যাতন করার একপর্যায়ে আবরার ফাহাদ বমি ও প্রস্রাব করে ফেলেন। এরপর তাঁকে হলের বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। বদলানো হয় তাঁর জামা-কাপড়। মিজানের দেওয়া আবরারের বিরুদ্ধে শিবির করার ‘তথ্যের’ ভিত্তিতে তাঁকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
পরে আবরারের অবস্থা বেশি খারাপ হলে রাত আড়াইটার সময় ইফতি মোশাররফ, মুজাহিদ, তাবাখখারুল ও তোহা মিলে আবরারকে তোশকে করে হলের দোতলার সিঁড়িতে রাখে। এরপর আসামিরা বুয়েটের চিকিৎসক ও অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনেন। চিকিৎসক আবরারের দেহ পরীক্ষা করে ঘোষণা দেন তিনি মারা গেছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে পরস্পরের সহায়তায় শিবির সন্দেহে আবরারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী।
অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়। ২১ জনের মধ্যে ১৬ জনের নাম আবরারের বাবার করা হত্যা মামলার এজাহারে আছে।