ইথানলে সারবে কোভিড-১৯ ভাইরাস!এমন দাবি করেছেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের করোনাভাইরাস গবেষক অধ্যাপক ড. মোঃ আলিমুল ইসলাম। যদিও এটি ল্যাররেটরিতে গবেষণায় এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মুরগির ওপর এক গবেষণায় ইথানলের এমন কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানান আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই বিজ্ঞানী।
সরকার চাইলে কোভিড-১৯ ভাইরাসের ওপর এই গবেষণা করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, এজন্য প্রয়োজন বিসিএল-৩ টাইপের ল্যাব ও করোনার রোগী। করোনা পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. আলিমুল ইসলামের এমন দাবি কিছুটা হলেও আশার আলো ছড়িয়েছে ময়মনসিংহে।
ড. আলিমুল বলেন, যে কোন ভাইরাসের দুটি আবরণ থাকে। ইথানল কিংবা সাবান প্রয়োগে ওই দুটি স্তর গলে যায়। এমতাবস্থায় ধ্বংস হতে বাধ্য ভাইরাসটি।
এই বিজ্ঞানী জানান, আরএনএ গোত্রের করোনাভাইরাসের বেশ কয়েকটি জাত রয়েছে। কোভিড-১৯ এর একটি। এর আগে মুরগি আক্রান্ত হয়েছিল এভিয়ান ইনফেকশাস ব্রঙ্কাইটিস ভাইরাস ও ইনফ্লু¬য়েঞ্জা ভাইরাসে। ইথানল প্রয়োগ করে এই ভাইরাসটি ধ্বংস করা গেছে। গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে এটি প্রমাণ করতেও সক্ষম হয়েছে এই বিজ্ঞানী। আরএনএ গোত্রের প্রতিটি ভাইরাসের চরিত্র প্রায় কাছাকাছি বলে ইথানলে কোভিড-১৯ সারবে বলে মনে করছেন এই অনুজীব বিজ্ঞানী। এই ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্ত রোগী কী মাত্রায় এই ইথানল ব্যবহার করবেন সেটিও বাতলে দিয়েছেন তিনি।
২৫ এমএল ইথানলের সঙ্গে ২৫ এমএল ফোটানো পানি যোগ করে যে মিশ্রণ তৈরি হবে সেটি দিনে ৩ বার গারগেল করলেই সারবে করোনা। সেই সঙ্গে মিশ্রণের ভাপ নিলে ফল মিলবে আরও দ্রুত। গারগেলের সময় প্রথমবার ৩০ সেকেন্ড করে ব্লিচিংযুক্ত পানির বালতি কিংবা কোন পাত্রে ফেলে দিতে হবে। দ্বিতীয়বার গারগেলের সময় ফের ৩০ সেকেন্ড করার পর এক মিনিট মুখের ভেতর রেখে দিয়ে ফেলে দিতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ৩ বার করলেই ফল মিলবে। আরও কার্যকর ও দ্রুত ফল পেতে গারগেলের ১৫ মিনিট পর সমপরিমাণ মিশ্রণের ভাপ নিতে হবে দিনে ৩ বার।
এভাবে ৩ দিন করলেই পুরোপুরি সুস্থতা মিলবে। সাধারণ সর্দি জ্বর কাশি ও গলা ব্যথাসহ শ্বাসকষ্টের রোগীরও এটি করে ফল পেতে পারেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীরাও এটি করে কার্যকর ফল পেতে পারেন। তবে যেহেতু ইথানল ব্যবহারে সরকারের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমতি নিতে হবে। কারণ ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরিতে গবেষণার কাজ ছাড়া এর ব্যবহারে অনুমতি নেই। সরকার চাইলেই এটি সম্ভব। ড. আলিমের মতে, ইথানল একাই আরএনএ ইনভেলপড ভাইরাস সমূহের লিপিড পদার্থ সহজেই ধ্বংস করতে যথেষ্ট। তবে উষ্ণ গরম ইথানল ভাইরাসের ইনভেলপড দ্রুত ধ্বংস করতে সহায়তা করবে।
এছাড়া প্রদাহজনিত গলাব্যথার ক্ষেত্রে উক্ত এলাকার কোষগুলো থেকে জলীয় বাষ্প সহজেই শোষণ করে নেবে। ফলে গলার প্রদাহ কমে আরামবোধ করবে রোগী। মানুষের ওপর এই গবেষণায় প্রয়োজন বিসিএল-৩ টাইপের ল্যাব ও করোনার রোগী। সরকার চাইলে এই কাজটি করতে চান ড. আলিমুল ইসলাম ও তার দলের অনুজীব বিজ্ঞানীরা। এই বিজ্ঞানী নিজে ও তার আট জন ছাত্র ইথানল ব্যবহার করে এরইমধ্যে জ্বর ও সর্দি কাশিসহ শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন। তবে ইথানল ব্যবহারে এলার্জি রয়েছে এমন হৃদরোগী, এজমা ও ডায়াবেটিস রোগীদের এটি ব্যবহার বারণ বলে জানান তিনি।