ইসলামিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সন্ধ্যায় আবু ধাবির হোটেল শাংরি লায় মধ্যপ্রাচ্যের নয়টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, অনেক সময় বন্ধুপ্রতীম দেশের সঙ্গেও ভুল বোঝাবুঝি হয়। সেটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে নিতে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ দেন সরকার প্রধান।
রাষ্ট্রদূতদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তি চায়। যারা অস্ত্র বানায় তারা অস্ত্র বিক্রির একটা বাজার তৈরি করে। দেখা যায় যে মুসলিম দেশের জনগণই তার শিকার হয়। মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কোন বিকল্প নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও রপ্তানি কীভাবে বাড়ানো যায়, কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা কেমন, সেসব বিষয়ে কাজ করতে হবে রাষ্ট্রদূতদের। সেই তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন পণ্যের বাজার সৃষ্টি করতে হবে।
রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলেন বলেই বাঙালি জাতি আত্মপরিচয় পেয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। আগে অনেক কসরত করে দাতাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হতো। আমরা এখন সেই অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসেছে দেশ। এখন কাউকে দাতা বলা হয় না। বলা হয় উন্নয়ন সহযোগী।
নিজস্ব পদক্ষেপের মাধ্যমে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বন্ধ করার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও বলেন সরকারপ্রধান। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি।
দেশের বাইরে কাজ করতে গিয়ে কেউ যেন দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত না হন, সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি দিতে সবাইকে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দালালদের বিষয়ে সতর্ক করতে গ্রামে গ্রামে প্রচার চালাতে হবে। কেউ যেন দেশের বাইরে যেতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি কাউকে না দেয়, সেদিকে সবার নজর দিতে হবে।
প্রবাসীদের কল্যাণে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যারা প্রবাসে থাকেন, তারা যেন এই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা।
অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।