এক শিক্ষকই সম্বল ফরেনসিক বিভাগে! - দৈনিকশিক্ষা

এক শিক্ষকই সম্বল ফরেনসিক বিভাগে!

বগুড়া প্রতিনিধি |

বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক। ময়নাতদন্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বদলে আছেন মাত্র এক জন প্রভাষক। লাশ কাটাছেঁড়া, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেয়া, ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষা, ভুক্তভোগী নারীর বয়স নির্ধারণ ছাড়াও মেডিক্যাল কলেজে ক্লাস নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে এক জন মাত্র চিকিৎসককে।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, গত দেড় বছরে এ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ৭৪৯ লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। সেই হিসাবে প্রতিমাসে গড়ে ৪১ লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে ফরেনসিক বিভাগে। চলতি বছরের জুন মাসে সর্বোচ্চ ৬১ লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে এ হাসপাতালের মর্গে। এর বাইরে নারী ও শিশু ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষাও সামলাতে হয়েছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দিতে বিলম্বিত হওয়ায় হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলও বিলম্বিত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, এক জন অধ্যাপক, একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও তিন জন প্রভাষকের পদ আছে ফরেনসিক বিভাগে। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর ধরে শূন্য রয়েছে অধ্যাপক পদ। চার বছর ধরে নেই সহযোগী অধ্যাপক। আর সহকারী অধ্যাপকের পদ ফাঁকা তিন বছর ধরে। প্রভাষকের দুটি পদও শূন্য। এখন গোটা ফরেনসিক বিভাগ চলছে একমাত্র প্রভাষক ডা. ওয়াহিদা ওমর শাপলাকে দিয়ে। চিকিৎসক না থাকায় ময়নাতদন্ত আর ধর্ষণের ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াও প্রতিবেদন লেখা থেকে শুরু করে কলেজে ক্লাস নেয়া সবকিছুই একা সামলাতে হচ্ছে তাকে।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের রেজিস্টার অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৭৪৯টি লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে এ হাসপাতালে। এরমধ্যে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়নাতদন্ত হয়েছে ৪৭৬টি লাশ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৪ জুলাই মাস পর্যন্ত ২৭৩টি লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এরমধ্যে গত জুন মাসে সর্বোচ্চ ৬১ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করতে হয়েছে।

হাসপাতালের রেজিস্টার সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছরে রেকর্ড ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বগুড়ায়। ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষাও করতে হয়েছে ফরেনসনিক বিভাগের চিকিৎসককে।

এদিকে ফরেনসিক বিভাগে প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। প্রতি শিক্ষাবর্ষে এ মেডিক্যাল কলেজে গড়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক না থাকায় পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ঠিকমতো আইটেম ও টিউটোরিয়াল ক্লাসও হয় না।

ফরেনসিক বিভাগে শিক্ষক না থাকায় বর্তমানে কলেজের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. সুশান্ত কুমার সরকার ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন।

এ ব্যাপারে সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, চিকিৎসক সংকটে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় ময়নাতদন্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষায় সহযোগিতা করছেন অন্য বিভাগের কয়েকজন প্রভাষক। এ ছাড়া শিক্ষক সংকটের কারণে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের পাঠদান কার্যক্রম চলছে অতিথি শিক্ষক দিয়ে।

এ ব্যাপারে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ রেজাউল আলম জুয়েল বলেন, ‘শিক্ষক সংকটে অনেকটা খুঁড়িয়ে চলছে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ। এ বিভাগে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমাসেই প্রতিবেদন পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষক পদায়ন চেয়ে মৌখিকভাবেও অনেক জায়গায় ধরনা দেয়া হয়েছে।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067069530487061