চাটমোহর উপজেলার উত্তরসেনগ্রাম মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ এসছে প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের এসএসসি টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও অনিয়মিত অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থীকে বিশেষ সুবিধায় ফরম পূরণের সুযোগ করে দিয়েছেন বলে জানা যায়। এছাড়াও এসএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্তি টাকা নেওয়ারও অভিযোগ এই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের উত্তসেনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত টাকার অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলগতভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্বিগুণ টাকা নিলেও স্কুলের রশিদে বোর্ড নির্ধারিত টাকার অংকটি লিখে দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া এই স্কুল থেকে টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হওয়া অন্তত ২৫ জনকে বিশেষ সুবিধা নেওয়ার মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন স্বয়ং প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম। প্রথমদিকে অকৃতকার্যদের ফরম পূরণ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তার নিকট আত্মীয় ৩/৪ জন শিক্ষার্থী বেশ কিছু বিষয়ে ফেল করেও ফরম পূরণে করলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসে হট্টগোল সৃষ্টি করে। বিষয়টি স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি একাডেমিক সুপারভাইজারকে সেখানে পাঠান সুষ্ঠু সমাধানের জন্য। পরে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ঐ বিদ্যালয়ে যান এবং ঘটনা বিষয়টি তিনি শুনে চলে আসেন। পরে অকৃতকার্য সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে প্রধান শিক্ষক এমন আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ বিষয়ে উত্তরসেনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়টি সদ্য এমপিওভুক্ত হয়েছে। অকৃতকার্য কিছু শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ করার সুযোগ দিয়েছি, কারণ নতুন শিক্ষার্থী বেশি থাকলে কেমন হয়। আর ফরম পূরণে কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে না।
উপজেলা একাডেমিক সুপার ভাইজার গোলাম মোস্তফা জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডর নীতিমালা অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে সে কোনোভাবেই এসএসসির ফরম পূরণের সুযোগ পাবে না। যদি প্রধান শিক্ষক অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অনিয়মের মাধ্যমে ফরম পূরণের সুযোগ দেয় তাহলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফরম ফিলাপে বোর্ড নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা নিলেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজাদ হোসেন খলিফা জানান, আমরা ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্র/ছাত্রীদের ফরম পূরণ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু এখন যখন ফরম পূরণ করা হচ্ছে তখন কিছু অকৃতকার্য ছেলে তাদের অভিভাবকদের দিয়ে আবার এলাকার মেম্বর দিয়ে অনুরোধ করিয়ে তাদের ফরম পূরণ করতে অনুরোধ করছে। আসলে গ্রাম এলাকা বলেই সব নিয়ম কানুন মানা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।