চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ ও করোনার উপসর্গ নিয়ে এই পর্যন্ত মারা গেছেন অন্তত ৮০ জন। আর আক্রান্তের সংখ্যাও পেরিয়েছে চার শ। তবে আক্রান্তের চেয়ে মৃত্যুহার বেশি হওয়ায় জেলার সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে চাঁদপুরে করোনা আক্রান্তদের রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। করোনা রোগীদের সুচিকিৎসা দিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের প্রতিশ্রতি দিয়েছেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ এই চিকিৎসা সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে।
গতকাল শনিবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় এমন সুসংবাদ জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি নিজেই এটি সংগ্রহ করেছেন। এর দ্বারা হাই ফ্লু অক্সিজেন দেওয়ার কাজ চলবে বলে জানা গেছে।
সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টটি আপাতত এখন হাসপাতালের ৩০ শয্যায় রোগীদের সেবা দিতে সক্ষম হবে। পরে এটিকে আরো বাড়ানো যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'চাঁদপুরের জন্য একটি সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট আমি নিজেই ব্যবস্থা করেছি। তবে এটি বিদেশ থেকে আসতে মাসখানেক সময় লাগবে হয়তো।' তিনি বলেন, 'করোনা চলে গেলেও এই সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টটি সব সময়ের জন্যেই প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে আইসিইউর জন্য তো অবশ্যই।'
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড করা হয়। এখানে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত এবং উপসর্গ নিয়ে রোগী ভর্তি হচ্ছে। অনেক সময় মুমূর্ষু রোগী আসছে। যাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা। তখন তাদের সিলিন্ডার অক্সিজেনে কাজ হচ্ছে না। এতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকসহ সুশীল সমাজের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনে এগিয়ে এলেন।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ওই ভার্চুয়াল সভায় আরো যোগ দেন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শাহ কামাল, পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ প্রমুখ।
চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শিক্ষামন্ত্রীর এমন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই জেলার মুমূর্ষু রোগীর জন্য আশার আলো তৈরি হলো। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৩০১ জন করোনা পজিটিভ রোগী চাঁদপুরে অবস্থান করছেন। তাদের চিহ্নিত করে আগামী একদিনের মধ্যে আক্রান্ত রোগীদের বাসাবাড়ি ম্যাপিং করে কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করা হবে।
অন্যদিকে, একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটায় আজ সকাল থেকে চাঁদপুর সদরের বাবুরহাট বাজার পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা শহরের বড় এই বাজারটির সবধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এমন তথ্য জানিয়েছেন চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে চাঁদপুর জেলা সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাকের) সভাপতি অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন মিরন বলেন, শুধু বাবুরহাট বাজার নয়, গোটা চাঁদপুর জেলা কঠোরভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হোক। না হয়, করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলবে।