দেশ বর্তমানে উন্নতি করছে, প্রবৃদ্ধিও আশানুরূপ বাড়ছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬৫ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দেশের উন্নয়নকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াস হিসেবে সমতাভিত্তিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থান মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নতির জন্য শিক্ষানীতি ২০১০ তৈরি করা হয়েছিল। এটি আইন হিসেবে অবশ্য এখন জাতীয় সংসদে পাস হওয়ার কথা।
পাশাপাশি সরকার প্রধানের ঐকান্তিক ইচ্ছায় এক্রেডেন্সিয়াল কাউন্সিল তৈরি করা হলেও এটির বাস্তবায়নে সময় লেগে যাচ্ছে, তবে কর্মসংস্থানের জন্য ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’র ব্যাপক প্রচলন দরকার, যাতে করে ত্রিশের নিচে কর্মপ্রত্যাশী যুবক-যুবতীদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে। এখানে বলে রাখা দরকার, ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’ আর ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন’ এক নয়। উদ্যোক্তা উন্নয়ন একটি নির্দিষ্ট সীমায় আটকে যায়। পক্ষান্তরে ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’র ভিত্তি আরও সুদৃঢ় এবং সত্যিকার কর্মক্ষম ও স্কিলনির্ভর মানবসম্পদ তৈরিতে সহায়তা করে থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশ সরকারের ইচ্ছা সত্ত্বেও ‘ন্যাশনাল এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ (National Educational Qualification Framework) তৈরি করা সম্ভব হয়নি। অথচ অস্ট্রেলিয়ান এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক, থাই এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক এমনকি ভারতীয় এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক পর্যালোচনা করে দেখেছি, প্রি-প্রাইমারি থেকে উচ্চতর শ্রেণি ও গবেষণা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে সেখানে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান হোক, প্রকৌশল হোক এমনকি সাধারণ মাধ্যমে পড়লেও তার সমতা নির্ধারণ করা হয় কোর্সের ব্যাপ্তির ওপর ভিত্তি করে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে উন্নত বিশ্বের পাঠ্যক্রমে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি করে পরিলক্ষিত হয়েছে যে, তারা স্কুল পর্যায় থেকে উদ্যোক্তামনস্ক করার জন্য পাঠ্যক্রমে উদ্যোক্তা সম্পর্কিত কোর্স রেখে থাকে। আমি দাবি জানাব আমাদের জাতীয় টেক্সট বুক বোর্ডের কাছে--তাদের নবম-দশম শ্রেণির বইতে ‘উদ্যোক্তা অর্থনীতি’র তাৎপর্য, সুবিধা-অসুবিধা, কর্মসংস্থানের জন্য গুণাবলি, উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ এবং লাগসই প্রযুক্তির প্রায়োগিক কলা কৌশলের ওপর ১০০০ থেকে ১২০০ শব্দের একটি প্রবন্ধ জরুরী ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করতে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের মেধা-মননে স্ফূরণ ঘটে এবং তারা বিকশিত হয় নিজের পায়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চিন্তা-চেতনায়। বৈশ্বিক সম্পদও দেশে যখন ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে যার জন্য উদ্যোক্তার গুণাবলির বিকাশে একটি নিয়মতান্ত্রিক কর্মপন্থা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। দেশে বর্তমান তথ্য যোগাযোগ ও কারিগরি কৌশল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা যেন ধরে রাখা যায় সে জন্য সচেতন হতে হবে। উদ্যোক্তা উন্নয়ন শব্দটি একটি নির্দিষ্ট বৃত্তিতে আবদ্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু, উদ্যোক্তা অর্থনীতি শব্দটি আরও ব্যাপক অর্থে শিক্ষার্থীর প্রতিভা বিকাশ ও স্বাবলম্বী করে তুলতে সহায়তা করে থাকে। উদ্যোক্তা অর্থনীতির পাঠ্যক্রমে কেবল অর্থনীতি বিষয়ক প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয় না। পাশাপাশি সামাজিক উদ্ভাবন ও প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে উদ্যোক্তার বিকাশ সাধন, উদ্যোক্তা কর্মকাণ্ডের সামষ্টিক সুবিধাসমূহ, বিহেভিয়ারিয়াল অর্থনীতির সঙ্গে পণ্য বিপণন এবং সরবরাহজনিত ব্যবস্থাপনার অর্থনীতি সামাজিক উদ্যোক্তা ও মাইক্রো ফিন্যান্স এবং মাইক্রো ইন্স্যুরেন্স উদ্যোক্তা অর্থনীতির ওপর উচ্চতর পাঠ্যক্রম, অ্যাকাউন্টিং, ব্যাংকিং, ইন্স্যুরেন্স এবং উদ্যোক্তার ফাণ্ড নিয়ন্ত্রণ, ভ্যালু চেইন, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্যোক্তা অর্থনীতির বিকাশ, প্রকৃতি, উন্নয়ন, আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উদ্যোক্তার সুবিধা, প্রকল্প পরিকল্পনা এবং সে সম্পর্কে নিরীক্ষা ও উদ্যোক্তা সম্পর্কিত হাতে কলমে প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। ফলে দেখা যায় যে, উদ্যোক্তা উন্নয়ন একটি সীমিত অর্থে তৈরি হলেও উদ্যোক্তা অর্থনীতি বেশ বড় পরিসরে তৈরি হয়েছে এবং ব্যাপক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে উদ্যোক্তামনস্ক করে তুলছে।
এ জন্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সে উদ্যোক্তা অর্থনীতির ওপর প্রথমবারের মতো প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি পোস্ট গ্রাজুয়েট পর্যায়ে উদ্যোক্তা উন্নয়নের ওপরও প্রোগ্রাম চালু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। এ প্রোগ্রামটি বর্তমানে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছে এবং ব্যবসা ও শিল্পবান্ধব পাঠ ও পঠন চালু হয়েছে। আমরা যদি উন্নত দেশের শিক্ষা কার্যক্রম পর্যালোচনা করি, তবে দেখব, তাদের অধিকাংশ পাঠ্যক্রমে উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়টির প্রাধান্য থাকে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ৩৬টির বেশি কোর্স রয়েছে। আমি যখন থাইল্যান্ডে নারিসিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্যোক্তা সম্পর্কিত পোস্ট ডক্টরেট করার জন্য দরখাস্ত জমা দিতে যাই, সে সময়ের ডিন আমাকে আমার সুপারভাইজার ড. বিচিওয়ানা রতনাবাসুমের সামনে প্রশ্ন করেছিলেন, তুমি কেন উদ্যোক্তা নিয়ে গবেষণা করবে? আমার উত্তরটি ছিল অতি সহজ, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের মঙ্গলের জন্য তরুণদের অধিক কর্মসংস্থানের জন্য উদ্যোক্তা তৈরি করতে চাচ্ছেন। এ বিষয়ে অধিকতর বাস্তবনির্ভর জ্ঞান অর্জন করে উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা করাই আমার রিসার্চ প্রপোজালের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য।’
আসলে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পোস্ট ডক্টরেট গবেষণা কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হয়েছিল আমাকে। এমনকি যারা দেশে কথায় কথায় উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ফান্ড দেশ-বিদেশ থেকে সংগ্রহ করে থাকে তারা তথ্য-উপাত্ত দিতে নানা কার্পণ্যই করেনি কেবল, বরং তথ্য চেয়ে নানা হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছিল। সে সময়ে আমার থাইল্যান্ডের সুপারভাইজার বেশ সাহস ও আন্তরিকতা দেখিয়েছিলেন। আসলে উদ্যোক্তা অর্থনীতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ বড় ভূমিকা রেখে থাকে। উদ্যোক্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো হচ্ছে মানুষকে নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে সজাগ করা, গ্রুপ তৈরি করা, সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, চাষাবাদ ও অচাষাবাদযোগ্য কর্মকাণ্ড শুরুর ব্যবস্থাপনা, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে উপযুক্ত নীতিমালা, সমাজকে আরও উন্নয়নমুখী করা, কারিগরি অগ্রসারমানতা, নিজ থেকে সহায়তা করা, পেশাজীবীদের সম্পৃক্ত করা, কর্মসূচি শুরুর জন্য অর্থায়ন, সামাজিক পরিবেশ, আইনগত সহায়তা করা, প্রাতিষ্ঠানিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন। সর্বস্তরে উদ্যোক্তা অর্থনীতির বিকাশ সাধনে চাই আরও সামাজিক সচেতনতা।
যদি প্রশ্ন করা হয়, হাজার বছরের সেরা বাঙালি উদ্যোক্তা কে? প্রশ্নের উত্তরে বিন্দুমাত্র অপেক্ষা না করে বলব, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যাঁর নেতৃত্বে একটি স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছিল। আজ তাঁর সুযোগ্য কন্যার উদ্যোক্তা গুণের কল্যাণে মানুষ আর্থিক সক্ষমতা পাচ্ছে। এক্ষেত্রে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আমি যখন দেখি, আমার ছাত্র-ছাত্রীরা সংগ্রাম করে নিজের পায়ে কেবল দাঁড়ায়নি, বরং সমাজ ও জাতির জন্য প্রশংসা কুড়িয়ে আনছে, তখন বুক ভরে যায়। আবার, সম্প্রতি যখন পত্রিকায় দেখলাম ক্লাস নাইনের মেয়েকে ধনীর দুলাল নৃশংসভাবে সহযোগীদের সহায়তায় মেরে ফেলে রেখেছে পতেঙ্গা সি বিচে, তখন দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে হৃদয়। আবার সম্প্রতি ধানমণ্ডিতে একটি দুঃখজনক ঘটনা অবলোকন করলাম। চার তরুণ যারা নিজেরা সক্ষম নন, কিন্তু কালো টাকা ও অবাধ অর্থের মালিক পিতা-মাতার বখাটে সন্তান ঠিক রাজাকারদের মতো হুঙ্কার দেয়- স্বাধীন বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তরুণদের আর কী দোষ! ওরা তো জানে না--কত সহজে পিতা-মাতার অবৈধ প্রাচুর্য ও মানুষের প্রতি অবজ্ঞার কী করুণ ঘটনা? স্বাধীন দেশে বুদ্ধিজীবীর বেঁচে থাকার অধিকার নেই- ওই তরুণদের ভাষ্যমতে। এটা আসলে অজ্ঞ মানুষের প্রচার-প্রচারণার ফল। যে জাতি শিক্ষিত, শিক্ষক এবং মানুষকে অসম্মান করে, তারা কখনও বড় হতে পারে না। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও বেলাল্লাপনা করে মুষ্টিমেয় তরুণ-তরুণী দিশেহারা। তাদের ইয়ার বন্ধুরা কোন্ গোল্লায় যাচ্ছে কেবল ভুক্তভোগীরা জানে। নাফিসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, কিংবা সম্প্রতি মালিন্দরে বিমানে সংঘটিত বাংলাদেশী তরুণের ঘটনা কেবল সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তিকে সুযোগ দিচ্ছে। এ ধরনের যুবক-যুবতী কখনও দেশের জন্য ভাল কিছু করতে পারবে না। তাদের সম্পর্কে সিনেমার শিরোনাম ‘আবার তোরা মানুষ হ’-এর মতো। এদের যেভাবে মগজধোলাই করা হয়েছে তা কহতব্য নয়। এ ব্যাপারেও সামাজিক প্রতিরোধ দরকার।
দেশের অগ্রযাত্রায় যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদের দ্বারা জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তারা কখনো কর্মোপযোগী শিক্ষার পরিবেশ পেলেও কাজে লাগাতে পারবে না। এ জন্য এদের আবার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা থাকা দরকার।
এদিকে যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে পৃথক করা হয়েছে, তা বিশ্বের কোন দেশে হয় না। এমনকি আজকাল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাল ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির জন্য দরখাস্তের কোন সুযোগ নেই। এটি অবশ্যই একটি বৈষম্য। সম্প্রতি দুটো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞাপনে লিখে দিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করলে চাকরির জন্য দরখাস্ত করতে পারবে না। এখন আমাদের দেশের প্রথম দশটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান কোন অংশে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে নিচে নয়। এখন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ছেলেমেয়ে যদি দরখাস্ত করতে চায়, সেও তো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পড়বে। তাহলে এ ধরনের বিধান কেন? এ বিষয়ে আশা করি শিক্ষামন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেবে। নইলে ফাইল ফেলে রেখে ধূলার আস্তরণই কেবল পড়বে--সাদা সুতায় আটকে যাবে সকল ভাল কাজ। ইস্ট-ওয়েস্টের অর্থনীতি বিভাগের মান পুরনো চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ভাল। সেখানে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন স্যার, প্রফেসর ড. একেএম এনামুল হক স্যারের মতো ভাল শিক্ষকরা রয়েছেন। সম্প্রতি একটি কর্মশালায় অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. একেএম এনামুল হক স্যার যেভাবে ব্লুমস টেকনোলজির প্রায়োগিক কৌশল বিভিন্ন লেভেল অনুযায়ী দেখিয়েছেন, তা ভাল লাগল। মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলস এসেসমেন্টের কর্মশালায় গিয়ে খুব ভাল লাগল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় থেকে শুরু করে ডিরেক্টর, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকমণ্ডলী (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট), পুরনো ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা, বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলের গুণগত মান পরিবর্তন অত্যন্ত ইতিবাচক। আসলে সরকার সাড়ে নয় বছরে বেশ ভাল কিছু কর্মসূচি শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়েছে। যখন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের কোয়ালিটি এসেসমেন্টে গিয়েছিলাম, দেখলাম পাঁচটি স্টেকহোল্ডার প্রোগ্রামে দারুণভাবে কাজ করে চলেছে। আসলে শিক্ষা বিভাজন দ্বারা হয় না। গুণগতমানসম্পন্ন শিক্ষায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দশটির র্যাবঙ্কিং সততার সঙ্গে করা উচিত। তবে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মান উন্নয়নে সুযোগ পাবে। এ জন্য প্রতিযোগিতামূলক বাজার ব্যবস্থায় সরকারী-বেসরকারি এ দু’ভাগে বিভক্ত করা উচিত নয়। প্রয়োজনে যুগোপযোগী আইন করার নির্দেশ দানের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি যথার্থই Strategic leader.
আসলে কর্মোপযোগী শিক্ষার মূলমন্ত্র হচ্ছে Input কে ব্যবহার করে সুন্দরভাবে Output-এ রূপান্তর করা। উদ্যোক্তা কেবল ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা পণ্য উৎপাদনকারী নয়- তাকে সৃজনশীল হতে হবে- নবতর সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে। জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন বর্তমান সরকার প্রধান করতে চেয়েছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই প্রতিটি প্রোগ্রামে উদ্যোক্তা তৈরির জন্য গুরুত্বারোপ করতে হবে। উদ্যোক্তা অর্থনীতির বিকাশ সাধনের জন্য স্নাতক পর্যায়ে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সময়োপযোগী প্রোগ্রাম অনতিবিলম্বে চালু করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। বস্তুত ইনডেকটিভ লার্নিং ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার প্রতি উদ্যোগী করে, আর এক্ষেত্রে সর্বস্তরে কর্মপোযোগী শিক্ষার জন্য উদ্যোক্তা অর্থনীতির বিকাশ সাধন করতে হবে।
লেখক: অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক
[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়]