রাজধানীতে কোচিং ব্যবসার আড়ালে জাল শিক্ষা সনদ দিচ্ছে প্রতারক চক্র। জাল শিক্ষা সনদ বাণিজ্যে প্রতারক চক্র মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিজনের কাছ থেকে। দীর্ঘদিন ধরে চক্র জাল শিক্ষা সনদের বাণিজ্য করে আসলেও এতদিন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল। চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে র্যাব -৩।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল রকিবুল হাসান জানান, গত শনিবার রাতে গুলশান থানার বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের ৮ম তলায় প্রাইভেট স্ট্যাডি অ্যাকাডেমিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মো. আজিজুর রহমান, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শরিফুল ইসলাম এবং মো. হায়দার আলী নামে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি সার্টিফিকেট, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি সার্টিফিকেট, মার্কশিট, প্রসংশাপত্র, প্রাইভেট স্ট্যাডি অ্যাকডেমিতে ভর্তি ফরম-প্যাড, বিভিন্ন সার্টিফিকেট প্রত্যাশী ব্যক্তিদের তথ্যসংবলিত রেজিস্ট্রার বুক উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক আরও বলেন, ১ মাস আগে এক যুবক র্যাব-৩-এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে তিনি বলেন, তার কাছ থেকে একটি চক্র সার্টিফিকেট দেয়ার জন্য ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু তাকে সার্টিফিকেট দেয়া হয়নি। ওই চক্রেরও কোন খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি। ওই অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে র্যাব-৩। তদন্ত করতে গিয়ে বাড্ডা ও গুলশান এলাকার এ চক্রের খোঁজ পায় র্যাব-৩। পরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, গুলশান ও বাড্ডা থানাধীন বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের ৮ম তলায় প্রাইভেট স্ট্যাডি অ্যাকাডেমি এবং প্রগতি টাওয়ারে আরেকটি কোচিং সেন্টারের আড়ালে সার্টিফিকেট জালিয়াতির ব্যবসা চলছে। এ চক্রের হোতা মো. জিয়াউর রহমান। সে কোচিং ব্যবসার অন্তরালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যেকোন বছরের অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রি পাসের সার্টিফিকেট, সব বোর্ডের এসএসসি ও এইচএসসি পাসের সার্টিফিকেট উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট এবং সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ২/৩ মাসের মধ্যে সরবরাহ করে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা দীর্ঘদিন যাবত কোচিং বাণিজ্যের আড়ালে গ্রামের সহজ-সরল স্বল্প শিক্ষিত ছাত্র-ছাত্রীদের টার্গেট করে তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে বানোয়াট-জাল শিক্ষা সনদ বিক্রি করে আসছিল।