প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে মানুষ। আতঙ্কিত হওয়ারই কথা, কেননা এটি একটি সংক্রামক ব্যাধি। ফলে ইচ্ছা থাকলেও ধারে কাছে যাওয়ার সাহস হয়ে উঠে না। করোনায় মৃতদের লাশ নিয়ে প্রতিদিন ঘটছে নানা হৃদয়স্পর্শী ঘটনা। এমন একটি ঘটনা ঘটল নেপালে।
দুই সপ্তাহ আগে করোনাভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে বুটওয়ালের হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন বাবুরাম থাপা (৩৪)। মৃত্যুর ১১ দিন পরে তার লাশ নিতে সম্মত হয়েছে পরিবার।
থাপার পরিবারের সদস্যরা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করেছিলেন। থাপার মৃত্যুর ১১ দিন পরে প্রাদেশিক সরকারের তার পরিবারের দাবির সঙ্গে একমত হন। পরে তারা লাশ গ্রহণে সম্মত হন। হাসপাতাল থাপার চিকিৎসা করতে বিলম্ব করেছিল দাবি করে পরিবারের সদস্যরা লাশ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।
থাপা মূলত পাল্পার রিবদিকোট গ্রামীণ পৌরসভার বাসিন্দা। বিশ্বব্যাপী করোনভাইরাস সঙ্কটের পরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। তিনি ফিরে আসার এক সপ্তাহ পরে ঠান্ডা, কাশি এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই পরপারে পাড়ি জমান থাপা। যদিও পরবর্তীতে ফলাফলে দেখা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।
থাপার স্ত্রী রিতা জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার স্বামীর পরীক্ষায় দেরি করার অভিযোগ করেছিলেন এবং কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর তদন্ত এবং পরিবারকে ত্রাণ সরবরাহ না করা পর্যন্ত তার লাশ নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের সাথে এক বৈঠকের পরে, সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা রিতাকে একটি চাকরি দেওয়ার এবং তাদের দুই ছেলের পড়াশোনার (গ্রেড ১২ পর্যন্ত) দায়িত্ব নিতে সম্মত হয়। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ তহবিল থেকে থাপার পরিবারকে ৮ লাখ ৪০ হাজার রুপি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।